শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৮ পূর্বাহ্ন
পরিবর্তন ডেস্কঃ
গতকাল শনিবার ফ্রান্সের স্থানীয় সময় রাত ২টা ১৫ মিনিটে ডাক্তার তার মৃত্যুর কথা চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত করেন।
ইন্না-লিল্লাহি অ-ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
মৃত্যুকালে তার বয়ছ হয়েছিল ৩৮ বছর।
ব্যক্তি জীবনে তিনি বিবাহিত ও ১২ বছর ও সাড়ে ৩ বছর বয়সী দুই কন্যা সন্তানের পিতা। তার দেশের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলায়। সাতক্ষীরাতে তিনি সাংবাদিকতা পেশায় জড়িত ছিলেন এবং ইউনিয়ন পরিষদের কাউন্সিলর ছিলেন।
২০২২ সালের জুন মাসে তিনি ফ্রান্সে আসেন এবং নভেম্বরে OFPRA থেকে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ঈদ-উল ফিতরের ২ দিন পর গত ২৪ এপ্রিল বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে Paris এর Saint Ouen তে অবস্থিত Hopital Bichat @ Medical College
হসপিটালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। ডাক্তাররা তাকে জরুরি ভিত্তিতে আইসিইউতে স্থানান্তর করে এবং লাইফ সাপোর্ট মেশিনের মাধ্যমে তার হার্ট সচল রাখা হয়। ডাক্তার জানিয়েছিলেন, তার হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে। তবে, বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম।
কিন্তু, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অপার মহিমায় দীর্ঘ ১৮ দিন পর ১০ মে তার জ্ঞান ফেরে। চোখ মেলে তাকায় সে। ধীরে ধীরে কিছুটা উন্নতির দিকে যায় সে। খুলে ফেলা হয় লাইফ সাপোর্ট মেশিন। গত ১৩ ও ১৪ই মে সে আমাদের সঙ্গে কথাও বলে মোটামুটি ভালোভাবে। যদিও ডাক্তারেরা আমাদের জানাচ্ছিলেন, তার অবস্থা তখনও আশঙ্কামুক্ত নয়। কিন্তু, ক্রমাগত ভালোর দিকে যাওয়ায় আমরা বিশ্বাস করতে শুরু করি যে, আল্লাহ পাক এ যাত্রায় তার হায়াত ফিরিয়ে দিয়েছেন।
তবে, গত ১৫/০৫/২০২৩ তাং সোমবার সকালে ডাক্তারের ফোন পেয়ে আমরা স্তম্ভিত হয়ে যাই। ডাক্তার জানান, তার শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতি হচ্ছে এবং আমাদের হসপিটালে যেতে বলা হয়। যেয়ে দেখি তাকে আবারও লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়েছে এবং তার সেন্সও নাই। ডাক্তার জানালেন, তার হার্ট ফাংশন করছে না তাঁরা জানালেন, তাঁরা আবারও হার্ট ট্রান্সপ্লান্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে হার্ট খুঁজছেন।
এরপর, গত কাল ২৭ মে বিকেলে হসপিটাল কতৃপক্ষ ফোন করে দ্রুত হসপিটালে যেতে বলেন। যেয়ে দেখি তার অবস্থা একেবারে খারাপ।
এ দিন তার হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট/প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে তার অবস্থার অবনতির দিকে।
ডাক্তার জানালেন, ক্লিনিক্যালি ডেড। এরপর ১১টা ১৫ মিনিটে লাইফ সাপোর্ট মেশিন খুলে নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে মৃত ঘোষণা করা হয়।
মিঠু সম্পর্কে আমার মামা। ফ্রান্সে তার আর কোনো স্বজন নেই। চেষ্টা করেছি সাধ্যমত তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার। আমি ছাড়া সরোয়ার ভাই ও তারেক ভাই মিঠুর জন্য যে সহমর্মিতা দেখিয়েছেন তা নিজের স্বজনরা করতো কি না সন্দেহ আছে। আল্লাহ তাদের উত্তম প্রতিদান দিন। বাংলাদেশ থেকে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, সামাজিক ব্যক্তিত্ব শেখ আব্দুল ওয়াদুদ, সাংবাদিক নেতা মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জলভাইসহ মিঠুর অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী বারবার খোঁজ নিয়েছেন। সবার জন্য দোয়া।
সর্বশেষ অবস্থা :
মৃত্যুর পর তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে লাশ সম্ভব দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশে নিয়ে দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লাশ ব্যবস্থাপনা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কবে, কোথায় ও কখন তার জানাযা হবে তা আপনাদেরকে সময়মতো জানানো হবে ইনশাআল্লাহ।
সবশেষে, মিঠুর পক্ষ থেকে আপনাদের কাছে বিনীতভাবে দোয়ার আবেদন জানাচ্ছি যে, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেন তার জীবনের সকল গুনাহ মাফ করে দিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন। আমিন।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।