সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তিঃ
আপনার আশেপাশে ঘটে যাওয়া তথ্য আমাদের জানান। যাচাই সাপেক্ষে আমরা প্রকাশ করার চেষ্টা করবো। ## আমাদের মেইল করুনঃ [email protected] অথবা [email protected] ## প্রয়োজনেঃ +8801715-395106 অথবা +8809696195106
আজকের সংবাদঃ
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র ও শিক্ষা অনুদানের চেক বিতরণ ডিমলায় ২৪২ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই মাদক কারবারি আটক  গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-১ গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ভুয়া হোমিও ডাক্তারের নকল ঔষধ তৈরি ও প্রতারণা  নোবিপ্রবিতে ক্যারিয়ার সেমিনার ও প্রোগ্রামিং কনটেস্ট অনুষ্ঠিত গোপালগঞ্জের জমি দখলে বাঁধা দেওয়ায় হামলা বাড়ি-দেকান লুট অহত-৫ গোপালগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ( দুদক ) এর অভিযান নোবিপ্রবিতে প্রথমবারের মতো ’মিট আপ উইথ ভাইস চ্যান্সেলর ’  অনুষ্ঠিত গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ। বিজয়ের ৫৩ বছর উপলক্ষে আয়োজিত হয়েছে ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং

৫০ কেজিতে এক মণ, নির্বিকার প্রশাসন!

অনলাইন ডেস্কঃ রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর হাট। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা হাটটি অঞ্চলের অন্যতম বড় আমের হাট হিসেবেই অধিক পরিচিত। আম পাকার আগে থেকেই হাঁকডাকে ভরপুর থাকে বাজারটি। সিজনাল ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি চাষি কিংবা বাগান মালিকরাও আম বিক্রি করতে আসেন এই বাজারে।

সাপ্তাহিক হাটের দিন ছাড়াও প্রতিদিনই বেলা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়েই যেন বাড়ে লোক সমাগম। তবে বাজারের আড়তদার বা পাইকারি ক্রেতাদের কাছে জিম্মি চাষি বা বিক্রেতারা। গণিতের হিসেবে ৪০ কেজি ধরে এক মণ কেনা বেঁচা হলেও এই হাটে এক মণ সমান ৫০ কেজি। ক্ষেত্র বিশেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ কিংবা ৫৪ কেজিতেও।সরেজমিনে জানা যায়, প্রতি মণে ৬ থেকে ১৪ কেজি পর্যন্ত অতিরিক্ত দেওয়ার এই প্রথাকে ঢলন বলা হয়। অনেক আগে থেকেই আম বিক্রির এই প্রথাটি পরিচিত আম সংশ্লিষ্টদের কাছে। এর প্রতিবাদ করতে গিয়েও বিপাকে পড়তে হয় গ্রাম থেকে আসা চাষিদের। বাজারের আড়তদাররা সম্মিলিতভাবে হুমকি দেন আম না কেনার, এতে লাভ নয় বরং ক্ষতিরই শঙ্কা থাকে চাষিদের। স্থানীয় প্রশাসন সব জেনেও দর্শকের ভূমিকায় থাকেন বলেও অভিযোগ বাগান মালিকদের।

বাজারে পুঠিয়ার আমগাছী থেকে আম বিক্রি করতে এসেছিলেন আহাদ আলী। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওরা (আড়তদাররা) ৫০ কেজিতে এক মণ ছাড়া আম নিচ্ছে না। কি করা যাবে? শেষমেশ বাধ্য হয়ে বেঁচতেই হচ্ছে। আমরা যারা চাষি বা পাইকারি বিক্রেতা আছি আন্দোলন করছি, কিন্তু যারা আম কেনে তারা আর নিবে না, সব বন্ধ করে দিয়ে বলবে আম আর কিনবো না।

তিনি আরও বলেন, এক রকম বাধ্য হয়েই বেশি করে দিতে হয়। গাছের আম তো পাকে পড়ে যাচ্ছে, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমাদের তো আর উপায় নাই। অভিযোগ আর কি, সবাই জানে। সবাই এভাবেই দেয় তাই আমরাও দেই। যখন বাধা-বিঘ্ন করি তখন বলে আমরা আর আম কিনবো না, তোমরা যেটি পারো বেঁচো।

আমের বাজার সম্পর্কে তিনি বলেন, এবার আমার গোপালভোগ, আটি, লকনা, হিমসাগর, আম্রপালি জাতের আম ছিল। আগে গোপালভোগ ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা মণ দাম ছিল, ২২০০ টাকা মণ পর্যন্ত বিক্রি করছি, পরে দাম কমে ১৭০০ টাকা মণে নামছে। আর আটি আম শুরুতে ১৬০০ টাকা মণ থাকলেও এখন ৭০০/৮০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। লকনা আম আগে ৮০০ টাকা মণ বিক্রি করছি, আর এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা মণে। সব আমের দামই কমেছে।

আরেক আম বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, আজকে প্রায় ১৫/১৬ মণ আম বিক্রি করছি। আড়তে যদি যাই ৪৮ কেজিতে এক মণ নেয়, আবার ছোট আম বলে ৫ থেকে ১০ কেজি বাদ দিয়ে দেয়, হিসেব করে খুচরা ৫০/৭০ টাকা হলে সেটাও দেয় না। আমরা নিরূপায়। আজকে আড়তদারের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবো, কালকে আর আম নিবে না। আমি কাঁচা মালটা তখন কি করবো?

তিনি আরও বলেন, আড়তদাররা এসব করলেও প্রশাসনের তৎপরতাটা নেই। শুধু পুলিশ এসে একটু পাহারা দেয়, তারা সহযোগিতা করে। আগে তো ছিল কাঠার দাঁড়িপাল্লা, আর এখন ডিজিটাল পাল্লা। আগে দাঁড়িপাল্লায় সোলা দিয়ে রাখতো, আর এখন ডিজিটালে ২ কেজি বাদ দিয়ে রাখে। ২ কেজি বাদ দিয়ে রেখেও আবার হিসাবপাতি করে ৪৮ কেজিতে মণ নেয়। আমরা কই যাবো?

রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিয়ান থেকে নিজের বাগানের আম বিক্রি করতে এসেছিলেন মাজেদ আলী। এই স্কুল শিক্ষক বলেন, এবার দামের খুবই খারাপ অবস্থা। আম কেনার লোক কম। এছাড়া ফলনও বেশি হয়েছে এবার, তাই দাম কম।

তিনি আরও বলেন, এখন তো সারাদেশেই আম পাওয়া যায়। সবারই যদি নিজের প্রয়োজনীয় আমটা গাছেই হয়, তাহলে আর কিনবে কেন। তার ওপর এই ঢলন প্রথা। সবাই নিরুপায় হয়ে বিক্রি করছে। প্রতি বছর এভাবে বিক্রি করে করে সবাই অভ্যস্ত হয়ে গেছে।

ঢলন নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মুশফিকুর রহমান মিম নামের এক আড়তদার বলেন, আম কাঁচামাল, কিছু আম পচে নষ্ট হয়। তাই আমরা যখন কিনি, তখন ছয় কেজি ঢলন নিয়ে থাকি। আবার আমরা যখন বিক্রি করি তখনও কিছু বেশি দেই।

প্রশাসনের নির্দেশনার বিষয়ে জানেন কিনা—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটা তো জানি। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় পাঠানোর যেসব আম নষ্ট হবে, সেটা কে দেবে? তখন তো ব্যবসায়ীরাই ক্ষতির শিকার হবে। এই ক্ষতিএড়ানোর জন্যই ঢলন। আর এটা তো সবাইকে জানিয়েই নেওয়া হয়।

পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম হিরা বাচ্চু বলেন, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু প্রতিহত করতে পারি নি। তাদের কারণ দেখায়, বাহিরে যখন নেই তখন তো ঢলন দেয়।

আমরা বলেছি, ঢলন তো দরকার নেই। ৪০ কেজিতে মণ ধরে কম দামে ধরেন, ৫০ থেকে ৫৫ কেজিতে মণ করবেন এটা তো হিসাব মিলে না। আমরা সবাইকে নিয়েই চেষ্টা করছি, কিন্তু হয় না, করতে পারি নি বলেও উল্লেখ করেন উপজেলা চেয়ারম্যান।

তবে পুঠিয়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছকে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাসুম আলী বলেন, শুধু বানেশ্বর বাজারে না, কেশরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট, রহনপুর বাজারে রীতিমতো প্রথায় পরিণত হয়েছে ঢলন প্রথা। আমরা নিজেরাও এই ঢলন প্রথার বিরুদ্ধে চেষ্টা অব্যাহত রাখছি। বাজারের ব্যবসায়ী, ইজারাদার, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে অনেক বসা হয়েছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়নি। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আর্কাইভ

MonTueWedThuFriSatSun
      1
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
    123
45678910
252627282930 
       
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031   
       
      1
9101112131415
30      
   1234
567891011
12131415161718
262728293031 
       
15161718192021
22232425262728
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
2728293031  
       
2930     
       
    123
       
   1234
19202122232425
26272829   
       
22232425262728
293031    
       
      1
16171819202122
3031     
   1234
19202122232425
2627282930  
       
293031    
       
     12
3456789
17181920212223
       
  12345
2728293031  
       
  12345
6789101112
13141516171819
2728     
       
      1
3031     
   1234
19202122232425
262728293031 
       
282930    
       
     12
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31      
   1234
567891011
2627282930  
       
15161718192021
293031    
       
    123
45678910
       
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       
      1
9101112131415
3031     
    123
45678910
18192021222324
252627282930 
       
 123456
14151617181920
21222324252627
28293031   
       
 123456
28      
       
     12
17181920212223
31      
  12345
6789101112
20212223242526
2728293031  
       
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930     
       
    123
11121314151617
25262728293031
       
  12345
27282930   
       
      1
3031     
   1234
567891011
       
       
       
    123
45678910
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
     12
3456789
       
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।