বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০১:০৬ পূর্বাহ্ন
(জামান মৃধা, নীলফামারী প্রতিনিধি):- নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাটিয়া পাড়া গ্রামের হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী আমিনুর রহমানের স্ত্রী গোলাপজানের নামে গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে দুই বছর মেয়াদি ভালনারেবল গ্রুপ ডেভলপমেন্ট (ভিজিডি) তার অজান্তেই একটি কার্ড নিবন্ধিত হয়েছে। তিনি জানতেন তার নামে কোন কার্ড নিবন্ধন হয়নি। সম্প্রতি নতুন কার্ড পেতে গত মাসে অনলাইনে আবেদন করতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার নামে একটি দুই বছর মেয়াদি ভিজিডি কার্ড ইউনিয়ন পরিষদে সম্পন্ন হয়েছে ইতিপূর্বেই। স্থানীয় প্রতারক একই গ্রামের প্রতিবেশী জয়নাল আবেদীন ভিজিডি কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও আড়াই হাজার টাকা নিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারের নিকট থেকে। গোলাপজান জানান, বিগত ১ বছর ১১ মাস এই দীর্ঘ সময় ৬৯০ কেজি চাল উত্তোলন করছেন অন্য কেউ। আমার নামে কার্ড হয়েছে শোনার পর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে জনতে পারি আমার নামও সুবিধাভোগীর তালিকায় রয়েছে, অথচ আমি কার্ড ও চাল কিছুই পাই নাই। ভুক্তভোগী পরিবার বলেন, জয়নাল প্রতারনা করে আমার কার্ডটি দিয়ে নিজেই চাল উত্তোলন করেছে সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত থাকতে পারে? স্থানীয়দের অভিযোগ, শুধু গোলাপজান নয় এই ইউনিয়ন পরিষদে একইভাবে আরও কয়েকজনের নামে কার্ড করে অন্যরা চাল নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব কার্ডের বিপরীতে গত দুই বছরে কয়েক মেট্রিক টন চাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে উপকারভোগীদের নামের তালিকা উন্মুক্ত না থাকায় একজনের কার্ড ব্যবহার করে অন্যজনের চাল নেওয়ার সুযোগও তৈরি হয়। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পূরবী রানী রায় বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভিজিডি কার্ডের বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি যাচাই বাছাই করে দেখেন কার্ডটি গোলাপজানের নামেই রয়েছে। কার্ডটি তার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য সদর ইউপি সচিবকে বলেছেন। ডিমলা সদর ইউনিয়ন পরিষদ সচিব রমজান আলী বলেন, তিনি কিছুদিন আগে যোগদান করেছেন। চাল বিতরণ কার্যক্রমে ছিলেন না। তিনি বলেন, দুই বছর মেয়াদি গোলাপজানের কার্ডটি দিয়ে গত ২৩ মাসে অন্য কেউ চাল তুলে নিয়েছে । পরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কার্ডটির শেষ মেয়াদের ৩০ কেজি চাল গোলাপজানকে দেওয়া হয়েছে। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার কার্ডটি তাকে দেওয়া হয়নি। ডিমলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান হাচানুর রহমান বলেন, গোলাপজান এই কার্ডে চাল উত্তোলন না করলেও গত ২৩ মাসে তার নামের ৬৯০ কেজি চাল কে বা কাহারা তুলে নিয়েছে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, প্রকৃত কার্ডধারী যদি তার কার্ড সম্পর্কে না জানেন এবং ভিজিডির চাল না পেয়ে থাকেন, সে বিষয়ে তদন্তের নির্দেশনা দিয়েছি।এখন পর্যন্ত প্রতিবেদন হাতে পাইনি। প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।