রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন
জামান মৃধা ডিমলা নীলফামারিঃ-
ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ,(আইপিএল, বিপিএল,পিএসএল) সহ যে, কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ, ঘরোয়া ক্রিকেট ম্যাচ, এমনকি স্থানীয় ক্রিকেট খেলা নিয়েও নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সর্বত্র চলছে জমজমাট জুয়া খেলা। বিগত আসরগুলোতে এভাবে জুয়া খেলে ব্যবসা-বাণিজ্য নষ্টসহ অনেকে ঋণ গ্রস্ত হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। এদিকে, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) খেলার সময়ও একই অবস্থা তৈরি হয়েছিলো নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায়। বিপিএল জুয়া খেলে ওই সময় ঋণগ্রস্ত হয়ে অত্মহত্যা করেছিলো অনেকে। ছাতনাই কলোনি,টুনিরহাট,ডিমলা,ডালিয়া,গয়াবাড়ী,সহ ডিমলা উপজেলার প্রায় প্রত্যেকটি ইউনিয়নে তাদের নিয়োজিত এজেন্ট রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ বেট ৩৬৫ সহ যেকোনো ক্রিকেট ম্যাচ ও অনলাইন জুয়ার ব্যবসা করে আসছে। উল্লেখ্য বাংলাদেশে বেট ৩৬৫ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ও অবৈধ। অত্র এলাকার জুয়াড়িদের ডলার, রুপী, পাউন্ড, সরবরাহ করে দিনদিন অবৈধপথে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে কয়েক জন ব্যক্তি মাত্র, পক্ষান্তরে সর্বস্বান্ত হচ্ছে অত্র এলাকার মানুষ। এতে করে চুরি/ছিনতাই,মারামারি সহ আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, প্রশাসন নির্বিকার। জমজমাট জুয়া বাণিজ্যের বিষয়ে প্রশাসনের কোনো ধরনের নজরদারি না থাকায় জুয়া এখন যেন ওপেন সিক্রেটে পরিণত হয়েছে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ হল সর্বোচ্চ বাজেটের একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। এ খেলা ছাড়াও যে কোন দেশীয় ঘরোয়া ক্রিকেট টুর্ণামেন্টে এ খেলায় অংশগ্রহণ করেন বিশ্বের সব নামী-দামী খেলোয়াড়। কিন্তু আইপিএল,বিপিএল,পিএসএল,জুয়ার নেশায় মেতে উঠেছে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, বেকার যুবক, রিকশা-ভ্যান চালক, গাড়ির স্টাফ, দোকান কর্মচারী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ।
পাড়া-মহল্লা,চায়ের দোকান, অফিস, বাসা-বাড়ী এমনকি যেখানেই টিভি সেখানেই চলছে বাজি ধরার নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। খেলা শুরু হওয়ার পর থেকে এই বাজি ১০০ থেকে শুরু হয়ে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত বাজি ধরা হচ্ছে। কেবল ম্যাচে হারজিত নিয়েই বাজি নয়, প্রতি ওভারে ওভারে- এমনকি বলে বলে বাজি ধরছেন ছোট-বড় বাজিকররা। এতে করে প্রতিদিনই প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বাজিকরের দল।
এছাড়া, স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে বেট ৩৬৫ নামের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেশে-বিদেশের বাজিকরদের সঙ্গেও বাজি ধরে থাকেন এখানকার উঠতি বয়সী স্কুল কলেজগামী ছাত্ররা। ফলে এসব জুয়াড়িরা অনেকটাই থেকে যাচ্ছে প্রশাসনের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
মোবাইল ও ইন্টারনেট টিভি দেখে সহপাঠিদের সঙ্গে ফোন, হোয়াটস্আপ, ইমু ও ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে খেলার হারা-জেতার উপর বিভিন্ন অংকের টাকা বাজি ধরা হয়। কোন খেলোয়াড় বেশি রান করবে, কোন বোলার বেশি উইকেট পাবে, কোন ব্যাটস ম্যান বেশি ছক্কা মারবে, কে বেশি চার মারবে, কোন বলে চার বা ছয় হবে এসবের ওপর প্রতি মুহূর্তেই চলছে বাজিধরা। এভাবে উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজার ও প্রত্যন্ত অঞ্চল আইপিএল,বিপিএ,পিএসএল সহ ক্রিকেট জুয়ায় ভাসছে গোটা উপজেলা। ফলে ক্রিকেট জুয়ার ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে শিক্ষার্থী সহ যুবসমাজ।
এ ব্যপারে ডিমলা থানা ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা(ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, আইপিএল,বিপিএল,পিএসএল অথবা বেট ৩৬৫ সহ যে কোনো ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে জুয়ার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। বিষয়টি যেহেতু জেনেছি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিবো। সঠিক তথ্য প্রমাণ পেলে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সাঁজার ব্যবস্থা করা হবে।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।