বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৪ অপরাহ্ন
জাহিদুল বাসার (জাহিদ),সাতক্ষীরা :
প্রবাসীরা বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় চালিকাশক্তি। কাজেই অভিবাসন খাতকে নিরাপদ করার পাশাপাশি বিদেশ-ফেরত অসহায়দের পাশে থাকতে সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। সোমবার (১১ নভেম্বর) সকালে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের উদ্যোগে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের জেলা অ্যাডভোকেসি কর্মশালায় এ আলোচনা হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ। এসময় প্রধান অতিথি বলেন, ব্র্যাকের আজকের এই কর্মশালায় আয়োজনে ব্র্যাককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে সরকার যেমন প্রত্যেক কাজে অফিসার নিয়োগ করে, তেমনি এনজিও সমূহ অফিসার নিযোগ করে থাকেন। কোন কাজ এর স্বচ্ছতা থাকা জরুরী। স্বচ্ছ ভাবে সকলে করলে এবং সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান মিলে কাজ করলে সফলতা অর্জন করা সম্ভব। পৃথিবীর সকল দেশে ভালো সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বয় করে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তিনি আরোও বলেন, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের নীতিমাল অনুযায়ী কাজ করলে সেখানে ক্ষতিগ্রস্থ বিদেশফেরতরা উপকৃত হবে। এক্ষেত্রে মিডিয়ায় যারা কাজ করেন তারাও বিভিন্ন তথ্য প্রচার ও প্রসারে ভুমিকা রাখতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সংকটে থাকা বিদেশ-ফেরতদের জন্য ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের পুনরেকত্রীকরণ সহায়তার প্রশংসা করে জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘অভিবাসন খাতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব রুখতে ব্র্যাক সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিয়েছে। অ্যাডভোকেসি কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ রিপন বিশ্বাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব খান,সমাজ সেবা অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক সন্তোষ কুমরা নাথ। এসময় অতিথিরা বলেন, নিরাপদ অভিবাসন আরো সুদৃড় করতে সচেতনতা কার্যক্রম আরো বাড়াতে হবে।ভারত থেকে বিদেশে গেলে যেখানে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয় সেখানে আমাদের দেশে কেনো পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ হবে। এক্ষেত্রে ব্যাক পেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করতে পারে যাতে অভিবাসীরা জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে পারে। যারা বিদেশে যেতে চায় তারা যেনো স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে যোগাযোগ করে জেনে বুঝে বিদেশ যায়। আমাদের দেশে অনেকেই না জেনে বিদেশে যাচ্ছেন যেখানে টিটিসি ও ডেমো অফিসের সাথে যোগাযোগ করে যেনো যায় সে বিষয়ে উল্লেখ করেন। এক্ষেত্রে ব্র্যাক সহ অন্যান্য স্টেক-হোল্ডারদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে ।
অ্যাডভোকেসি কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের ম্যানেজার মোহাম্মদ হোসেন খান। তিনি উপস্থিত অতিথিদের সক্সেগ ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের নানা প্রকল্পের মাধ্যমে দেওয়া সেবা, বিদেশ-ফেরত অভিবাসী ও গমনেচ্ছুদের বিভিন্ন সমস্যা ও তার সমাধান বিষয়ে আলোচনা করেন। কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন বিদেশ-ফেরত অভিবাসীরা। দালালের মাধ্যমে অনেক টাকা খরচ করে বিদেশে গিয়ে প্রতারিত হওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন ক্লাইমেট ব্রিজ ফান্ডের (সিবিএফ) সহায়তায় কেএফডাব্লিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সঙ্গে অংশীদারত্বে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করছে ‘স্ট্রেনদেনিং ইকোনোমিক রিকভারি ক্যাপাসিটি অফ ক্লাইমেট-ভালনারেবল-নিউ-প্যুওর, স্পেশিয়ালি রিটার্নি মাইগ্রেন্টস্ ইমপ্যাক্টেড বাই কোভিড-১৯’ প্রকল্প। এ প্রকল্পের মাধ্যমে সাতক্ষীরার ক্ষতিগ্রস্ত বিদেশ-ফেরতরা মনোসামাজিক কাউন্সেলিং, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুনরেকত্রীকরণে সহায়তা পাচ্ছেন।
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার জেলা কর্মস্ংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মোঃ মোস্তফা জামান, ব্র্যাকের সাতক্ষীরা জেলা সমন্বয়কারী এ.এস.কে. আশরাফুল মাশরূদ,
সাতক্ষীরা ডিস্ট্রিক কোঅর্ডিনেটর মোঃ হুমায়ুন রশীদ,সেক্টর স্পেশালিষ্ট ইকোনমিক রিইন্ট্রগ্রেশন, সাতক্ষীরা সহ বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, অভিবাসী পরিবারের সদস্য এবং প্রকল্পের সফল সেবাগ্রহীতাগণ।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন সংস্থা এবং সারাবিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এনজিও- ব্র্যাক প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে দেশে ও দেশের বাইরে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ব্র্যাকের বিভিন্ন কর্মসূচিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি কর্মসূচি হল মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম। ব্র্যাকের এই প্রোগ্রাম ২০০৬ সাল থেকে দেশের অভিবাসনপ্রবণ জেলাসমূহে বিদেশগামী নারী ও পুরুষের মাঝে সঠিক তথ্যের প্রসারের মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম, বিদেশ-ফেরতদের পুনরেকত্রীকরণ, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, অভিবাসন খাতে অ্যাডভোকেসি ও নানাবিধ সহযোগিতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।