শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩০ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্কঃ আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের পাশেই পাওয়া গেল টাইটান সাবমেরিনের ধ্বংসস্তূপ। চার দিন মহাসাগরের তলদেশে ব্যাপক তল্লাশির পর বৃহস্পতিবার উদ্ধারকারীরা ডুবোজাহাজটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা জানান।
সমুদ্র পর্যটনে এই সাবমেরিন পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওশানগেট। বৃহস্পতিবার প্রথম প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে পাঁচ আরোহীর মৃত্যুর কথা জানানো হয়।এরপর যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের আশপাশে আরও ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। সেগুলোর মধ্যে টাইটান সাবমেরিনের বড় পাঁচটি টুকরার সন্ধান পাওয়া গেছে। সাবমেরিনটি বিস্ফোরিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কখন সেটি বিস্ফোরিত হয়েছে, সে বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।সংবাদ সম্মেলনে সাবমেরিনের পাঁচ আরোহীর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়। আরোহীদের মরদেহ উদ্ধার করা যাবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি উদ্ধারকারীরা।
সাবমেরিনের আরোহীরা ছিলেন ব্রিটিশ ধনকুবের হামিশ হার্ডিং (৫৮), পাকিস্তানি ধনকুবের শাহজাদা দাউদ (৪৮) এবং তাঁর ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯), ফ্রান্সের নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য পল অঁরি নাজোলে এবং ওশানগেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টকটন রাশ। তাঁদের মধ্যে হামিশ হার্ডিং অভিযাত্রী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি মহাকাশ ভ্রমণের পাশাপাশি কয়েক দফায় দক্ষিণ মেরু ঘুরে এসেছেন। পাকিস্তানের অন্যতম ধনী পরিবারের সদস্য শাহজাদা দাউদ যুক্তরাজ্যে বসবাস করতেন। তাঁর ছেলে সুলেমান ছিলেন শিক্ষার্থী। পল অঁরি নাজোলে ছিলেন টাইটানিক বিশেষজ্ঞ। এর আগেও টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে গিয়েছিলেন তিনি।রোববার কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড প্রদেশের সেন্ট জন শহর থেকে টাইটান ডুবোজাহাজটি নিয়ে রওনা দেয় ‘পোলার প্রিন্স’ নামের একটি জাহাজ। আটলান্টিকের যেখানে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, সেখানে জাহাজটি পৌঁছানোর পর পাঁচ আরোহীকে নিয়ে সাগরের তলদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে সাবমেরিনটি। সাগরপৃষ্ঠ থেকে তলদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরুর পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সাবমেরিনটির।এরপর সাবমেরিনের সন্ধানে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়। উত্তর আটলান্টিকে যে অঞ্চলজুড়ে উদ্ধারকাজ চালানো হয়, তার আয়তন যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যের দ্বিগুণ। আরোহীরা বেঁচে আছেন বলে গতকালও আশা প্রকাশ করেছিলেন পরিবারের সদস্য ও উদ্ধারকারীরা। গত মঙ্গল ও বুধবার কানাডার উদ্ধারকারী দল আটলান্টিকের তলদেশ থেকে কিছু শব্দ শনাক্তের পর ওই আশা আরও জোরদার হয়।গতকাল অভিযানে নতুন করে ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের দুটি জাহাজ অংশ নেয়। নামানো হয় ‘ভিক্টর-৬০০০’ নামের বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন রোবট। ওই রোবটই টাইটানের ধ্বংসাবশেষের ছবি তুলে পাঠায়।
টাইটানিক ডুবে যায় ১৯১২ সালে। উত্তর আটলান্টিকের তলদেশে ১২ হাজার ৫০০ ফুট গভীরে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ রয়েছে।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।