শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৮ অপরাহ্ন
মো: আক্তার হোসেন,
সুনামগঞ্জে ছাতকে উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী/কার্য ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে ছাতক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ৫ম শ্রেণী পাশ আব্দুল নূর এখনো বহাল তয়িবতে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ থাকার পরও ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে, বিআর ও সিএসপি’র গুরুত্বপুর্ন দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
ভোলাগঞ্জ-ছাতক রোপওয়ের ট্রেসেল সুরক্ষা বোল্ডার-পাথর উত্তোলন করে বিক্রি, বাসা বাড়ি, দোকান, বিভিন্ন স্থাপনা, নদীর পারের ড্রাম্পিং সাইট বহিরাগতদের কাছে ভাড়া দিয়ে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করছেন বলে তার বিরুদ্ধে অন্তহীন অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, মোঃ আব্দুল নূর ছাতক পৌর শহরের বাগবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেনী পাশ করে ১৯৮৬ সালে ইলেকট্রিক খালাসী পদে ছাতক বাজার দপ্তরে চাকুরীতে যোগদান করেন। ১৯৯৩ সালে কার্পেন্টার হেল্পার ২০১১ সালে ওয়ার্ক সুপাভাইজার পদে পদোন্নতির পর প্রায় ৮ বছর পূর্বে বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্র্ণীতি ও রেলওয়ের স্লীপার, লোহা, পাথর চুরি করে বিক্রির অভিযোগে ঢাকায় বদলী করা হয়। ২০১৪ সালে ফের ছাতকে বদলী হয়ে আসেন। পরবর্তীতে রোপ লাইন (টিএলআর) অস্থায়ী কর্মচারীর বেতন আত্মসাত ও ভোলাগঞ্জের পাথর চুরির অভিযোগে ২০১৫ সালে ময়মন সিংহের জামালপুরে আবারও বদলী করা হয়। পরবর্তীতে জামালপুর হতে সিলেট বদলী হন ওয়ার্ক সুপারভাইজার হিসেবে। স্থানীয় এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির আর্শিবাদে এক সময়ের ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী ৫ম শ্রেণী পাশ আব্দুল নূর ২০১৮সালে (ভারপ্রাপ্ত) এসএই/কার্য্য/বিআর ভোলাগঞ্জ হিসাবে ছাতকে বদলী হয়ে আসেন। ২০১৯ইং সালে নভেম্বর মাসে ছাতক রেলওয়ের উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে ও সিএসপির (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব গ্রহন করেন।
দায়িত্ব পাওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে উঠেন আব্দুল নুর। নিজের ছেলে-মেয়েকে সরকারী ডিউটি না করিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাসে পর মাস বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকারী চাকুরীর নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে ব্যাস্ত মাহবুবুর আলম খালাসী। মেয়ে সুবর্না আক্তার খালাসী সরকারী ডিউটি ফাঁকি দিয়ে লেখা পড়া করেন সিলেটের একটি কলেজে। সরকারী চাকুরীর পাশা-পাশি ব্যবসা ও কলেজ-ভার্সিটিতে লেখা পড়া যায় কি না এমন প্রশ্নের কোন উত্তর মিলছেনা। আব্দুল নুরের কঠির জোর কোথায় ? স্থানীয়দের মধ্যে চলছে সমালোচনার ঝড়।
আরো জানা যায়, আব্দুর নুরের পূত্র মাহবুবুর আলম এক সময় ফেরী করে চা বিক্রি করতো। পরবর্তীতে বেশ কিছুদিন ট্রাকের হেলপার হিসেবে কাজ করে। রেলওয়ে সরকারী চাকুরীতে যোগদান করে পিতা-পুত্র-কন্যা আলাউদ্দিনের চেরাগ পেয়ে যায়। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তারা কোটিপতি অভিযোগ উঠেছে।
তাদের রয়েছে ২ টি ব্যবসা প্রতিষ্টান, ২টি ট্রাক, ২টি পিকাপ ভ্যান ও ১টি মোটরসাইকেল। এছাড়াও গ্রামের বাড়ীতে চলছে কয়েক লাখ টাকা ব্যয়ে বাসা তৈরীর কাজ। রেলওয়ের সরকারী বাসা বহিরাগতদের কাছে ভাড়া দিয়ে তিনি থাকছেন শীতাতপ নিয়নন্ত্রিত বিলাস বহুল ভাড়া বাসায়।
এক সুত্র জানায়, আব্দুল নূর এর খাস লোক হিসেবে পরিচিত আবু বক্কর সিদ্দিক (চকিদার) গত ১৬ মার্চ ২০২০ইং হতে ২০মার্চ ২০২০ইং ৫দিনের সিএল ছুটি নিয়ে বাড়িতে গিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও নিয়মিত বেতন ভাতা পাচ্ছেন। কিন্ত বিশ^ব্যাপী মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে সরকার এর সাধারণ ছুটি ঘোষনার মধ্যে সরকারী বর্হিভূত কাজ করতে অনিহা প্রকাশ করায় আব্দুল নুর ব্যক্তিগত আক্রোশে ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন মোঃ তাজুল ইসলাম নামে এক খালাসীকে। গত ১০এপ্রিল ২০২০ইং হতে মোঃ তাজুল ইসলাম খালাসীকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত দেখান আব্দুল নুর। এ ঘটনায় নির্বাহী প্রকৌশলী ছাতক বাজার বরাবর আব্দুল নুরের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাজুল ইসলাম। একই দপ্তরে দুই নিয়ম। আবু বক্কর সিদ্দিক চকিদার কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে আর তাজুল ইসলাম খালাসী কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার পর অনুপস্থিত দেখিয়ে বেতন ভাতা বন্ধ রাখার অভিযোগও রয়েছে।
এছাড়াও সিএসপির ২১০ টি মোল্ডের সাইড প্লেইট কম থাকায় মোঃ কামাল উদ্দিন ওয়েল্ডার কে অবৈধভাবে কাটিং ওয়েল্ডিং করে তৈরী করে দেওয়ার কথা বলেন আব্দুল নূর। নির্বাহী প্রকৌশলীর অনুমতি ছাড়া কামাল উদ্দিন তা তৈরী করে দিতে অস্বীকার করায় অকথ্য ভাষায় গাল মন্দ করেন আব্দুল নুর। এ ঘটনায়ও ০৩ মে ২০২০ইং তারিখে মাঃ কামাল উদ্দিন ওয়েল্ডার নির্বাহী প্রকৌশলী, ছাতক বাজার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
প্রধান সহকারী ও পিতা-পুত্র-কন্যার অনিয়ম-দূর্ণীতির অভিযোগে প্রধান প্রকৌশলী সিআরবি চট্টগ্রাম দপ্তরে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও কার্যত কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। একাধিক অনিয়ম-দূর্ণীতির নানা অভিযোগ থাকার পরও তাদের বিরুদ্ধে অইনগত কোন ব্যবস্থা না নেয়াতে বিষয়টি রহস্যজনক বলছেন স্থানীয়রা। সঠিক তদন্ত হলে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল।
ছাতক বাজার রেলওয়ের বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি বিষয়ে জাতীয় দৈনিক ‘ঢাকা প্রতিদিন’সহ বিভিন্ন অনলাইন ওয়েবপোর্টালে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলেও কতৃপক্ষের টনক নড়েনি। গত ১লা মে ‘সংবাদ প্রতিক্ষন’ ‘ক্রাইম সিলেট’ ‘দখিনের ক্রাইম, ‘সত্যবানীডটকম, ‘রূপালি বার্তা’ ‘বিবর্তন টিভি, পযযধঃধশনধৎঃধ.পড়স, দৈনিক সুনামগঞ্জ প্রতিদিনসহ বিভিন্ন অনলাইন ওয়েবপোর্টালে “ছাতক রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ৫ম েেশ্রণি পাশের কর্মকর্তা আব্দুল নুর” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রকাশিত সংবাদে আব্দুল নুর বলেন, ১৯৮৬ সালে আমার চাকুরী হয়। এসময় রেলের চাকুরীতে খালাসী পদে কোন শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হতনা। এমনিতেই চাকুরী হয়ে যেতো। আমি খালাসী থেকে কার্পেন্টার, কার্পেন্টার থেকে ওয়ার্ক সুপারভাইজার পদে প্রমোশন পেয়ে দক্ষতার ভিত্তিতে উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত আছি। তিনি ছাতক বাঘবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাত্র ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। হাইস্কুলে লেখাপড়া করেননি বলে তিনি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে ডিএন-২ ঢাকা, অতিরিক্ত দায়িত্ব নির্বাহী প্রকৌশলী ছাতক বাজার মোঃ সুলতাল আলী বলেন, আমার হেড কোয়ার্টার
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।