মঙ্গলবার, ১৫ Jul ২০২৫, ০২:৪১ পূর্বাহ্ন
পরিবর্তন ডেস্ক: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশের কিশোরী ফেলানি খাতুন হত্যা মামলার শুনানি ভারতের সুপ্রিম কোর্টে শুরু হয়েছে।
শুক্রবার বিচারপতি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও কে এম যোশেফের আদালতে ফেলানির পিতা মহম্মদ নুরুল ইসলাম ও ভারতের মানবাধিকার সংস্থা বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) সম্পাদক কিরীটি রায়ের করা রিট পিটিশনের শুনানিতে সরকার পক্ষ থেকে বক্তব্য পেশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
শুনানীর পরবর্তী দিন ১৮ মার্চ ধার্য্য হয়েছে। সেদিন আবেদনকারীদের পক্ষে বক্তব্য পেশ করা হবে বলে মামলার অন্যতম আবেদনকারী কিরীটি রায় জানিয়েছেন। ২০১৫ সালের ২ জুলাই সুপ্রিম কোর্টে ফেলানি হত্যার বিচার চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল। আদালত পিটিশনটি গ্রহণ করলেও গত ৫ বছরে নানা সময়ে দিন ধার্যের কথা জানা গেলেও কোনও শুনানি হয়নি। শুক্রবারই প্রথম এই মামলার শুনানি হয়েছে।
মাসুম সম্পাদক কিরীটি রায় এই প্রতিবেদককে বলেছেন, দু দুবার বিএসএফের আদালতে অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ান অমিয় ঘোষকে নির্দোষ বলে রায় দেবার পর ফেলানির পিতা মাসুমের কাছে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের আরজি জানিয়েছিলেন।
আবেদনে ফেলানি হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করার পাশাপাশি অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি পিতার সঙ্গে বিয়ের জন্য ফেলানি খাতুন বাংলাদেশে ফিরছিলেন। সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় কিশোরী ফেলানির জামা কাঁটাতারে আটকে গিয়েছিল। তার পিতা অবশ্য আগেই সীমান্ত পার হয়ে গিয়েছিরৈণ। এই সময় কিশোরীর চিৎকারে বিএসএফ জওয়ান অমিয় ঘোষ কোনওরকম প্ররোচণা ছাড়াই গুলি চালিয়ে বাংলাদেশি কিশোরীকে হত্যা করেছিল। সেই সময় কিশোরীর গুলিবিদ্ধ দেহটি পাঁচ ঘণ্টা কাঁটাতার থেকে ঝুলছিল। সেই ছবি দেশি বিদেশি মিডিয়ায় প্রকাশের পর প্রবল চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল। ফেলানি হত্যার বিচার চেয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে জোরালো দাবি জানানো হয়েছিল। এরপরেই বিএসএফের জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টে অমিয় ঘোষের বিচার হয়েছিল। ফেলানির পিতা ও মমতা পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহারে এসে আদালতে সাক্ষ্যও দিয়েছিল। কিন্তু সেই বিচারে অমিয় ঘোষকে নির্দোষ বলে রায় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই রায় নিয়ে প্রবল সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিএসএফের পূর্বাঞ্চলের ডিজি বিডি শর্মা মামলা পুনরায় রিভিউ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয়বারের বিচারের সময় ফেলানির পিতা মাতাকে সাক্ষ্য দিতে কোচবিহারে আসার অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরিবর্তে অমিয় ঘোষকে নির্দোষ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরেই অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি চেয়ে ফেলানির পরিবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার ও মাসুমের কাছে তার কন্যার হত্যাকারী বিএসএফ জওয়ানের শাস্তি এবং পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে ভারত সরকার যাতে উদ্যোগী হয় সেজন্য আবেদন করেছিলেন।
উল্লেখ্য, ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ফেলানি হত্যার তদন্ত করে ৫ লক্ষ রুপি ক্ষতিপূরণ দেবার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ক্ষতিপূরণ আজও দেওয়া হয়নি।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।