শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫০ পূর্বাহ্ন
হেলাল উদ্দিন,সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
কলেজে প্রথম পরিচয়েই বন্ধুত্ব, ভালোলাগা, এরপরই প্রেম নিবেদন। তারপর শুধুই ভালবাসা। নাটোরের শহীদ শামসুজ্জোহা অনার্স কলেজে পড়া অবস্থায় সাগর ও বীথির জীবনের গল্প ঠিক এমনই। আর কলেজ জীবনের প্রেমকে স্মরণীয় করে রাখতেই প্রেমিক-প্রেমিকা সিদ্ধান্ত নেন হাতিতে চড়ে বিয়ে করার।
রবিবার (১৬ মে) আট কিলোমিটার হাতিতে চরে বিয়ে করতে বর আসেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাকড়শোন গ্রামে। এলাকার উৎসুক জনতা এক নজর বর-কনে কে দেখতে বিয়ে বাড়িতে ভিড় জমায়। হৈ হৈ রৈ রৈ কা-ের মধ্যদিয়ে রীতিমতো বিয়ের আসর পরিপূর্ণ হয়ে যায় হাজারো জনতায়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাড়াশ উপজেলার ধামাইচ গ্রামের জুব্বার মন্ডলের ছেলে সাগর মন্ডল (২৪) ও মাকড়শোন গ্রামের মোঃ তোজাম্মেল প্রামানিকের মেয়ে তালজিলা আকতার বীথি (২৪) পার্শ্ববর্তী নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার শহীদ শামসুজ্জোহা অনার্স কলেজের ইসলামের ইতিহাসের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। কলেজে পড়া অবস্থায় তাদের প্রথম পরিচয়েই বন্ধুত্ব। এরপর তাদের দুইজনের মধ্যেই ভাব বিনিময়ের মধ্যদিয়েই প্রেম নিবেদন। এরপরই তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। আর তাদের দীর্ঘদিনের প্রেমকে স্মরণীয় করে রাখতে তারা সিদ্ধান্ত নেন হাতিতে চড়ে বিয়ে করার। পারিবারিকভাবেই সিদ্ধান্ত হয় তাদের বিয়ের। তারিখ অনুযায়ী বর সাগর মন্ডল রোববার (১৬) মে দুপুর দুইটায় তাড়াশ উপজেলার ধামাইচ এলাকা থেকে হাতিতে চড়ে বিয়ে করতে আসেন আট কিলোমিটার দুরে মাকড়শোন গ্রামের কনে তালজিলা আকতার বীথির বাড়িতে। সেখানে দুই লাখ টাকার দেনমোহর ধার্য্য করে সম্পন্ন হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। এদিকে হাতিতে বিয়ে হচ্ছে জেনে এক নজর বর-কনে কে দেখতে বিয়ে বাড়িতে ভিড় জমায় হাজারো মানুষ।
বিয়ে প্রসঙ্গে বর সাগর মন্ডল বলেন, কলেজে লেখাপড়া করতেই বীথির সাথে প্রথম পরিচয় হয়। এরই বন্ধুত্ব থেকে ভালোলাগা, এরপরই প্রেম নিবেদন। আর কলেজ জীবনের প্রেমকে স্মরণীয় করে রাখতেই পারিবারিকভাবেই সিদ্ধান্ত নেয়া হাতিতে চড়ে বিয়ে করার।
তিনি আরও বলেন, আমরাতো সবাই জানি। প্রেমকে স্মরণীয় করতে স¤্রাট শাজাহান তাজমহল গড়েছেন। বিয়েকে স্মরণীয় করতে একেকজন একেকভাবে বিয়ে সম্পন্ন করে। কেউ হেলিকপ্টারে, কেউ মাইক্রো-কারে সেখানে তো আমাদের এটি একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস।
বরযাত্রী রেজাউল করিম রঞ্জু বলেন, ৮ কিলোমিটার হাতিতে চরে বিয়ে এটাই মনে হয় প্রথম। সত্যি এটা একটি ব্যতিক্রমী বিয়ে। এ ধরনের একটি বিয়েতে বরযাত্রী হতে পেরে আমিও ভীষণ আনন্দিত। বরকে দেখতে হাজার হাজার মানুষ বিয়ের আসরে ভিড় করায় তাদের সামলাতে কনে পক্ষকে হিমশিম খেতে হয়েছে। সর্বোপরি সুন্দর পরিবেশে বিয়েটি সম্পন্ন হয়েছে।
স্থানীয় সগুনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহেল বাকী জানান, হাতিতে চড়ে বিয়ের আয়োজনে সত্যি ব্যতিক্রমী। এই ধরনের বিয়ে আজকাল চোখেই পড়ে না। তবে বিয়ে বাড়িতে বর-কনাকে দেখতে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উৎসুক লোকজন ভিড় জমান। এ নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যেও আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা যায়।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।