মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫০ অপরাহ্ন
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার লাউখোলা গ্রামের কৃষক মতিউর রহমান কাজী তাঁর জমিতে ঢ্যাঁড়স ও ঝিঙের আবাদ করেছেন। গত ৪ জুন রোববার সকালে ৮০ কেজি ঝিঙে ও ঢ্যাঁড়স নিয়ে মিরাষার চাষি বাজারে এসেছেন। প্রতি কেজি ৫ টাকা দরে বিক্রি করেন।
বিক্রেতা দেলোয়ার হোসেন ওই সবজি শরীয়তপুর জেলা সদরের বাজারে এনে খুচরা বিক্রেতার কাছে দিয়েছেন। বাজারে প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স ও ঝিঙে ৩০ টাকা করে বিক্রি করা হয়েছে।
বাজারের প্রতিটি সবজিতেই কৃষক সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না। কৃষক ও ক্রেতাদের মাঝে দুই স্তরের মধ্যস্বত্বভোগীরা একটি বড় অংশ মুনাফা করছেন। শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সবজির পাইকারি বাজার মিরাষার চাষি বাজার, কাজিরহাট বাজার ও ১০টি খুচরা বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
সবজিচাষি কৃষক, বিক্রেতা ও ক্রেতারা জানান, শরীয়তপুরের পাইকারি সবজির বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ২০ থেকে ২৫ টাকা, খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স ৫ থেকে ৮ টাকা, খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা। পটোল পাইকারি বাজারে ১০-১২ টাকা, খুচরা বাজারে ২৫-৩০ টাকা। চিচিঙ্গা-ধুন্দল, ঝিঙে পাইকারি বাজারে ৫-৬ টাকা, খুচরা বাজারে ২৫-৩০ টাকা। প্রতি কেজি শসা পাইকারি বাজারে ৮-১০ টাকা, খুচরা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা। কাঁকরোল প্রতি কেজি ৩০ টাকা, খুচরা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে ৫০ টাকা।
কৃষক মতিউর রহমান কাজী বলেন, ‘আমরা অনেক সবজির আবাদ করি। আমাদের বিক্রির জন্য পাইকারদের ওপর নির্ভর করতে হয়। পাইকাররা ওই সবজি বেশি দামে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। খুচরা বিক্রেতারা আবার তার দাম বাড়িয়ে দেন। ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কষ্ট করে ফসল ফলাই আমরা আর মানুষকে জিম্মি করে মুনাফা লোটে পাইকাররা। সরকারের নজরদারি না থাকায় এভাবে কৃষকেরা প্রতিনিয়ত ঠকছেন।’
মিরাষার চাষি বাজারের পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘কৃষকদের কাছ থেকে সবজি কেনার পর পরিবহন ব্যয়, শ্রমিক মজুরি বাবদ খরচ হয়। কিছু সবজি আবার নষ্ট হয়। কাঁচামালে একটু বেশি ব্যবসা না থাকলে আমরা টিকতে পারি না। অনেক সময় সবজি নষ্ট হয়ে আমাদের লোকসান গুনতে হয়।’
শরীয়তপুর জেলা শহরের পালং বাজারের খুচরা সবজির ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, ‘কৃষকদের কাছ থেকে এনে পাইকাররা আমাদের কাছে সরবরাহ করেন। তাঁরা নানা ধরনের খরচের কথা বলে দাম বেশি নেন। এ কারণে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাজার অনুসন্ধানকারী শরীয়তপুর কার্যালয়ের কর্মকর্তা ইউসুফ হোসেন বলেন, ‘কৃষক যাতে তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের সঠিক দাম পান, এ জন্য নিয়মিত বাজার পরিদর্শন করছি। কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা রয়েছে তা আমরা দূর করার চেষ্টা করছি। বেশি দামে পণ্য বিক্রি করা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে।’
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।