বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৩ অপরাহ্ন
ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী বিভাগ:
সময়ের পরিক্রমায় প্রযুক্তির ব্যবহারে বদলেছে দেশ। হয়েছে মানুষের জীবন মান উন্নয়ন। বেড়েছে কর্মসংস্থান। জীবন জীবিকার তাগিদে দিন দিন মানুষের কাজে লাগছে প্রযক্তি। আধুনিকতার ছোঁয়ায় বদলেছে আজ পুরো বিশ্ব তাইতো অজো পাড়া গাঁয়ে থেকেও মেধা খাটিয়ে পাওয়ার টিলারের মেশিনের মাধ্যমে ঘানি চালাচ্ছেন আজাদ আলী।
কাঠের ঘানিতে ভাঙিছেন সরিষা, বের হচ্ছে তৈল। এভাবেই প্রতিদিন সরিষা থেকে ৮ থেকে ১০ কেজি খাঁটি সরিষার তৈল বের করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পোরশা উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের বিষ্ণপুর বেড়াচৌকি গ্রামের প্রবীন ব্যক্তি আজাদ আলী।
এসময় তার সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৫০বছর যাবৎ বাবার তৈরি করা কাঠের ঘানি ব্যবহার করে আসছেন তিনি। দীর্ঘ দিন ধরে মূলত গরু দিয়েই কাঠের ঘানি চালিয়েছেন আজাদ আলী। কিন্তু খড়ের দাম বেশি হওয়া এবং গরুর কষ্ট লাঘবের কথা চিন্তা করেই মুলত তিনি এই অভিনব কায়দায় কাঠের ঘানিতে পাওয়ার টিলারের মেশিন সংযুক্ত করেন।
এতে তৈলের কোন প্রকার গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে কি না জানতে চাইলে আজাদ আলী বলেন, দেখুন গরু/বলদ দিয়ে একটি নামতে চার ঘন্টা সময় লাগতো। হতো সাড়ে তিন কেজি তৈল। মেশিন দিয়েও একই সময়ে সম পরিমানে তৈল বের হচ্ছে। এর ভালো দিকটা হচ্ছে, আগে গরু/বলদ দিয়ে দিনে একটি মাত্র ঘানি নামাতে পারতাম কিন্তু এই মেশিন সংযুক্ত করার পর থেকে দিনে অন্তত তিনটি করে ঘাটি নামাতে পারছি। এতে করে ঘানি থেকে প্রতিদিন ৮থেকে ১০কেজি তৈল অনায়াসেই নামানো সম্ভব হচ্ছে। ফলে লাভের দিকটাও বেশি।
আজাদ আলী আরোও বলেন, এ কাঠের ঘানির তৈল এক বছর বাড়িতে রাখলেও নষ্ট হবেনা। এমনকি নষ্টও হবে এর প্রকৃত স্বাদ। এদিকে আজাদ আলীর এমন অভিনব পন্থায় কাঠের ঘানি চালানোর বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আরোও অনেক পুরোনো ঘানির তৈল ব্যবসায়ীরা এই আইডিয়াকে কাজে লাগিয়ে তাদের ঘানিতেও পাওয়ার টিলার মেশিন স্থাপনের বিষয়ে ভাবতে শুরু করেছেন।
ইতিমধ্যে অনেকেই পাওয়ার টিলার মেশিন কিনে কাঠের ঘানিতে ব্যবহার শুরু করে দিয়েছেন। খোলা বাজারে মেশিনের তৈল ১শ থেকে ১৩০টাকা পর্যন্ত বিক্রি হলেও প্রতি কেজি ঘানির তৈল সব সময় ২শ থেকে ২৩০টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। গ্রামে গঞ্জে, পাড়া মহল্লায় এই যুগ যুগ ধরে ঘানির তৈলের এক বিশেষ কদর রয়েছে বলেও জানান এলাকার ঘানি ব্যবসায়ীরা।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।