সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২২ অপরাহ্ন
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ॥ ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আজ শনিবার। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে। নিকট অতিতের মধ্যে সবচেয়ে উৎসবমুখর পরিবেষে প্রাচারনা শেষে এবার জনরায়ের পালা। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরণের প্র¯‘তি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনের সামগ্রী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে গতকাল শুক্রবার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা স্ব স্ব কেন্দ্রে নিয়ে যান। এবারই প্রথম ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে ভোট নেয়া হবে; যন্ত্রের ভোটের কারা নগরপিতা হবেন এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। রাজধানীর দুই সিটির ২০টি স্থান থেকে ইভিএম কেন্দ্রে কেন্দ্রে বিতরণ করা হয়। তবে এ ভোটে উৎসবের পাশাপাশি সঙ্কাও রয়েছে। আধুনিক যন্ত্রে ভোট হলেও এনিয়ে সংশ্বয় প্রকাশ করছে বিএনপি। তবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলছে ভোট সুষ্ঠু হবে । প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, সকালে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখেছি, নির্বাচনের সামগ্রী বিতরণ দেখেছি। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। কোনো অসুবিধা নেই। মালামাল পৌঁছে গেছে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা বলেছেন কোথাও কোনো রকমের নির্বাচনে বিষয়ে কোনো আশঙ্কা নেই। সবাইকে ভোটরদের কেন্দ্রে আশার আহ্বান জানান সিইি এদিকে, তিন স্তরের নিরাপত্তায় রয়েছেন ৫০ হাজার আইন-শৃঙখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। এসব সদস্যের মধ্যে বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। এদিকে, টানা ২১ দিন পর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম। শুক্রবার মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা নিজ নিজ কর্মী, পোলিং এজেন্টসহ নির্বাচনী সমন্বয়দের সঙ্গে নির্বাচনের কলা-কৌশল নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। লক্ষ্য ভোটের ফল নিজের অনুকুলে নেওয়া। ঢাকার এ দুই সিটি নির্বাচনের প্রচারে বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ছাড়া উল্লেখযোগ্য সংঘর্ষ হয়নি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা অনেকটা নির্বিঘেœই প্রচার চালিয়েছেন। পাশাপাশি পিছিয়ে ছিলেন না অন্য প্রার্থীরাও। সবমিলিয়ে ভোটার ও প্রার্থীদের মধ্যে উৎসবভাব বিরাজ করছে। অপরদিকে ভোটগ্রহণ ও ফলাফল নিয়ে বিরাজ করছে একরকম শঙ্কাও। ইভিএমে ভোটদান সহজ প্রক্রিয়া হলেও এর মধ্যে কোন কারসাজি রয়েছে কি না এ নিয়ে মূলত শঙ্কায় প্রার্থী, কর্মী-সমর্থক, রাজনৈতিক দল ও ভোটাররা। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বলেছেন, দুই সিটির ভোট নিরাপদে হবে, আপনার (ভোটার) নির্বিঘেœ কেন্দ্র গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন। সিইসি হুদা বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আমরা বারবার বলেছি, তারা নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে দায়িত্ব পালন করবে। প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি, বারবার বলেছি, সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গীতে তারা দায়িত্ব পালন করবে। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন, তাদেরকেও সেরকম ইনস্ট্রাকশন দেওয়া আছে। মেয়র ও কাউন্সিলর পদের প্রার্থীরা তাদের ‘ইচ্ছা ও সুবিধামত, নির্বিঘেœ, বিনা বাধায়’ প্রচার চালাতে পেরেছেন দাবি করে সিইসি বলেন, এতে ভোটারদের মধ্যে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এবং তাদের আস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে আমি মনে করি। আশা করি নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, অবাধ হবে, সুষ্ঠু হবে, নিরপেক্ষ হবে।এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনের উপর রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা ফিরে আসবে বলে মনে করেন কি না- এই প্রশ্নে সিইসি বলেন, এটা আমি বলতে পারব না। আস্থা-অনাস্থা তাদের মানসিকাতার ওপর, কে কীভাবে দেখে, সেটার ওপরে। আমরা কখনও কোনো পক্ষপাতিত্ব নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করি নাই, করবও না। আর এনআইডির ডিজি ব্রি, জে. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেছেন, অবৈধভাবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিলে প্রচলিত আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে। শুক্রবার ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা, ইভিএমসহ সব শেষ প্রস্তুতির বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন। সাইদুল ইসলাম বলেন, অনেক সময় ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে কনফিউশন থাকে। প্রিজাইডিং অফিসার অথবা অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রিজাইডিং অফিসফিসার ভোটারের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে সমস্যা চিহ্নিত করার পরও ভোট দিতে পারবে না, তিনি শুধু সমস্যা চিহ্নিত করার পর ব্যালট ওপেন করে দিতে পারবেন। কারণ তার দায়িত্ব কেন্দ্রের নির্বাচন পরিচালনা করা। তবে যাদের সমস্যা তাদের জন্য বলেছি তারা ১ শতাংশ ভোটারের সহযোগিতা করার জন্য ব্যালট ওপেন করে ভোটারকে ভোটের অনুমতি দিতে পারবে। তিনি বরেন, ঢাকা দুই সিটিতে ২৮ হাজার ৮৭৮টি ইভিএম সেট প্রস্তুত রয়েছে। একটা অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে আমরা বদ্ধ পরিকর । সাইদুল ইসলাম বলেন, যদি কেউ অবৈধভাবে কারো ভোট দিতে চায় সেক্ষেত্রে আমাদের সতর্কতা থাকবে। কারণ যাদের ভোটের জন্য অফিসার ব্যালট ওপেন করে ভোটের অনুমতি দেবেন তাদের ফিঙ্গার প্রিন্ট ক্যাপচার করে রাখা হবে। পরে আমরা এটা চেক করব, ভার্চুয়াল চেকিংয়ের পর মূল সার্ভারের সঙ্গে পরীক্ষা করে দেখব। কেউ অবৈধভাবে ভোট দিয়েছে প্রমাণ পেলে আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে। বৈধ ভোটারকে ভোট প্রদানে সহযোগিতা করার জন্য কমিশন বদ্ধ পরিকর। আমরা প্রমাণ করতে চাই। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম। ভাটার চিহ্নিত করার প্রক্রিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি চিহ্নিত করার জন্য তার এনআইডি নাম্বার দিলে তাকে চিহ্নিত করতে পারব। স্মার্ট কার্ড নিয়ে আসলেও ভোটারকে শনাক্ত করতে পারব। পোলিংদের সামনে শানাক্তের প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হবে। তবে কোন ভোটারের কাছে যদি কিছুই না থাকে সে ক্ষেত্রে ভোটার তালিকা দেখে নম্বার দিলে কন্ট্রোল ইউনিটে তথ্য বের হবে। এছাড়াও প্রয়োজন অনুযায়ী নিয়ম অনুসরণ করে ১ শতাংশ ভোটারের ব্যালট ওপেন করতে পারবেন প্রিজাইডিং অথবা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার। এর বেশি লাগলে রিটার্নিং কর্মকর্তা দেখেবে। প্রয়োজনে এরপর ইসির মাধ্যমে সমাধান করতে পারবে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক বলেন, কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সব প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারব। ভোটকক্ষ চিহ্নিত করে ভোটের জন্য উপযোগী করতে সব কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সবাইকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এদিকে, কয়েকজন প্রার্থী দুই সিটির রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। এ শঙ্কার কারণ উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার রাতে পোলিং এজেন্ট ও ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা চেয়ে নির্বাচন কমিশনে দুটি পৃথক আবেদন করেছেন উত্তর সিটির বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। ইসি সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকার দুই সিটিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময়ে ঢাকা উত্তরে ৩৬টি ও দক্ষিণ সিটিতে ৫৭টি ওয়ার্ড ছিল। এবারের দুই সিটিতে ১৮টি করে ৩৬টি ওয়ার্ড সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এতে বেড়েছে ভোটার ও কেন্দ্র সংখ্যাও। এ নির্বাচনে দুই সিটিতে ২ হাজার ৪৬৮টি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ ভোটার। সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন ওয়ার্ডগুলোর অনেক জায়গায় যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো নয়। এছাড়া দুই সিটিতে বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অনেক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। সবমিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। শুধু তাই নয়, ইভিএমের প্রহণযোগ্যতার প্রশ্নের অনেক উত্তর মিলবে এ নির্বাচনে। ২২ ডিসেম্বর ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল ৩১ জানুয়ারি, মনোনয়নপত্র বাছাই ২ জানুয়ারি, প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ৯ জানুয়ারি। ভোটগ্রহণের তারিখ ৩০ জানুয়ারি থাকলেও ওইদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজা থাকায় তা পরিবর্তন করে ১ ফেব্র“য়ারি নির্ধারণ করা হয়। ১০ জানুয়ারি প্রচার শুরু হয়ে বৃহস্পতিবার প্রচার শেষ হয়। দুই রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার দুই সিটিতে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে সবমিলিয়ে ৭৫০ প্রার্থী চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে ঢাকা উত্তরে ৬ জন ও দক্ষিণ সিটিতে ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। বাকি ৭৩৭ জন কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। মেয়র পদে মূলত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহল। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীতাায় রয়েছেন বিএনপির ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। এ সিটিতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা আরও রয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন। বাকি মেয়র প্রার্থীরা হলেন- গণফ্রন্টের আবদুস সামাদ সুজন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আকতার উজ্জামান ওরফে আয়াতুল্লা, ইসলামী আন্দোলনের মো. আবদুর রহমান ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) বাহারানে সুলতান বাহার। অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলামের সঙ্গে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন বিএনপির তাবিথ আউয়াল। এছাড়াও এ সিটিতে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন- কমিউনিস্ট পার্টির ডা. আহাম্মদ সাজেদুল, এনপিপির মো. আনিসুর রহমান দেওয়ান, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) শাহীন খান ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শেখ মো. ফজলে বারী মাসউদ। দুই সিটিতে তিন স্তরের নিরাপত্তাঃ ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন ঘিরে থাকছে তিন স্তরের নিরাপত্তাবলয়। এগুলো হল-নির্বাচনপূর্ব, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন-পরবর্তী নিরাপত্তা ববস্থা। ইতিমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্র ও তার আশপাশের এলাকা গোয়েন্দা নজরদারির আওতায় এসেছে। নিরাপত্তার প্রথম ধাপে বৃহস্পতিবার থেকেই রাজধানীতে পুলিশের পাশাপাশি ৬৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত আরও ১০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য রির্জাভ থাকবে। গুর“ত্ব বিবেচনায় অনেক কেন্দ্রে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) বসানোর কাজ চলছে। দুই সিটিতে স্থাপন করা হয়েছে একাধিক কন্ট্রোলর“ম। আজ ভোটগ্রহণকে সুষ্ঠু করতে প্রস্তুত থাকবে র্যাবের হেলিকপ্টার, বিশেষায়িত সংস্থা সোয়াত, বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, র্যাবের ডগ স্কোয়াড ও ক্রাইসিস রেসপন্স টিম। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভোট গ্রহণকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য ইতিমধ্যে ১২৯ জন কর্মকর্তাকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শুক্রবার থকে রোববার পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন ম্যাজিস্ট্রেটরা। ঝুঁকিপূর্ণ সিটিতে মোট দুই হাজার ৪৬৮ কেন্দ্রের মধ্যে ১ হাজার ৫৯৭টি কেন্দ্র গুর“ত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ অর্থাৎ ৬৪ দশমিক ৭১ শতাংশ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। রিটার্নিং কর্মকর্তারা জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ কেন্দ্রের তালিকা করেছেন। আর সাধারণ কেন্দ্র রয়েছে ৮৭১টি। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৭টি থানা এলাকায় ১৮টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড এবং ৫৪টি সাধারণ ওয়ার্ড রয়েছে। এসব ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আনসার ও পুলিশের ৪২ হাজার ৬৮২ জন সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৫০ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। প্রার্থী সংখ্যা : ঢাকা উত্তর সিটিতে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে ৪৭০ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন ৩৩৪ জন। বাকি ১৩৬ জনের অনেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন আবার যাচাইয়ে অনেকের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। বর্তমানে মেয়র পদে ৬ জন, ৫৪টি সাধারণ ওয়ার্ডের বিপরীতে ২৫১ জন কাউন্সিলর ও ১৮টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৭৭ জন নারী কাউন্সিলর ভোটের মাঠে রয়েছেন। অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আছেন ৪১৬ জন। এ সিটিতে ৭ জন মেয়র পদে মনোনয়পত্র দাখিল করেছেন। তারা সবাই চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন। তবে কমেছে সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর সংখ্যা। এ সিটিতে ৭৫টি ওয়ার্ডে ৪৬০ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন ৩২৭ জন ও সংরক্ষিত ২৫টি ওয়ার্ডে ১০২ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও ভোটের মাঠে রয়েছেন ৮২ জন। প্রথমবার ইভিএম : জানা গেছে, ঢাকার দুই সিটিতে প্রথমবার ইভিএমে ভোটগ্রহণ করতে যাচ্ছে ইসি। দুই সিটিতে ভোটগ্রহণের জন্য ২৮ হাজার ৮৬৮টি ইভিএম প্র¯‘ত করা হয়েছে। ঢাকা উত্তরে ১৫ হাজার ৬৯২টি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৩ হাজার ১৭৬টি মেশিন ভোটে থাকবে। আরও জানা গেছে, ভোটকেন্দ্রে ইভিএমের কারিগরি সহায়তা দিতে সশস্ত্র বাহিনীর ৫ হাজার ১৫ সদস্য মোতায়েন থাকবেন। প্রতিটি কেন্দ্রে দু’জন করে সার্জেন্ট বা কর্পোরাল বা ল্যান্স-কর্পোরাল অথবা সৈনিক দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়া ৫২ জন জেসিও ও ২৭ জন অফিসারও মাঠে থাকবেন। ইতিমধ্যে দুই সিটির জন্য ৫ হাজার ৫৩৮ জন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য নিয়োগের আদেশ হয়েছে। ভোটার সংখ্যা : ঢাকা দুই সিটি নির্বাচনের রিটার্র্নিং কর্মকর্তার দফতর সূত্রে জানা গেছে, দুই সিটিতে ভোটার সংখ্যা ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৮ লাখ ৪৩ হাজার ৮ ও নারী ভোটার ২৬ লাখ ২০ হাজার ৪৫৯ জন। সিটি কর্পোরেশন হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটিতে ভোটার রয়েছেন ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন; যার মধ্যে পুরুষ ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৭ ও নারী ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৭০৬ জন। অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ভোটার সংখ্যা ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন; যার মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪১ ও নারী ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩ জন। ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষ : জানা গেছে, ঢাকার দুই সিটিতে ২ হাজার ৪৬৮টি ভোটকেন্দ্র ও ১৪ হাজার ৪৪৫টি ভোটকক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে ১ হাজার ৩১৮টি ভোটকেন্দ্র ও ৭ হাজার ৮৫৭টি ভোটকক্ষ এবং দক্ষিণ সিটিতে ১ হাজার ১৫০টি ভোটকেন্দ্র ও ৬ হাজার ৫৮৮টি ভোটকক্ষ রয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটিতে ৬৩৬টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে এবং দক্ষিণে ৬৪৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসব কেন্দ্র অবস্থিত। একক হিসাবে এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি ১১টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটির আওতাধীন মিরপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। একই সিটির তেজগাঁওয়ের সিভিল এভিয়েশন স্কুল অ্যান্ড কলেজে রয়েছে ১০টি ভোটকেন্দ্র। অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কদমতলীর একে হাই স্কুল কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ৮টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা : ঢাকার দুই সিটিতে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা রয়েছেন ৪৫ হাজার ৮০৩ জন। এর মধ্যে ২ হাজার ৪৬৮ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ১৪ হাজার ৪৩৪ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ২৮ হাজার ৮৬৮ জন পোলিং কর্মকর্তা রয়েছেন। প্রিসাইডিং ও ১৫ হাজার ৬৯২ পোলিং কর্মকর্তা ভোটগ্রহণ করবেন। অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ১ হাজার ১৫০ প্রিসাইডিং, ৬ হাজার ৫৮৮ সহকারী প্রিসাইডিং ও ১৩ হাজার ১৭৬ পোলিং কর্মকর্তা ভোটগ্রহণ করবেন। সিটি নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে ৭ ফ্যাক্টরঃ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে জয়লাভে মরিয়া আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। প্রচার শেষে গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত অঙ্ক কষেছেন এবং নির্ধারণ করেছেন নানা কর্মকৌশল। রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি নগরবাসীর মুখে মুখে প্রশ্ন- কারা হচ্ছেন দুই সিটির নতুন মেয়র। চায়ের দোকান, রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি ও রাজনীতির অন্দরমহলেও চলছে একই আলোচনা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মেয়রদের ভাগ্য নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে অন্তত সাত ফ্যাক্টর। এর মধ্যে রয়েছে- তর“ণ, বস্তিবাসী, নারী, আঞ্চলিকতা, সনাতন ধর্মাবলম্বী, শ্রমিক ও নীরব ভোটার। এ ছাড়া এলাকাভিত্তিক নানা সমীকরণও ভোটের ফলে প্রভাব রাখতে পারে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বস্তিবাসী, সনাতন ধর্মাবলম্বী ও আঞ্চলিক ভোট যারা টানতে পারবেন, তারাই এগিয়ে থাকবেন। এর বাইরে জয়-পরাজয়ে অন্যতম ফ্যাক্টর হবে তর“ণ ভোটাররা। এরা যেদিকে ঝুঁকবেন, জয়ের পাল্লা সেদিকেই ভারি হতে পারে। কারণ মোট ভোটারের অর্ধেকের বেশি তর“ণ। নারী ভোটাররাও হতে পারেন ফ্যাক্টর। শ্রমিকরা বরাবরই অধিকারবঞ্চিত। তাই তাদের ভোটও কোন দিকে যাবে সেটা গুর“ত্বপূর্ণ। রাজনীতির বাইরে বড় একটি অংশ নীরব ভোটার। তারা সবকিছু বিবেচনা করে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এসব নীরব ভোটার যেদিকে ভোট দেবেন জয়ের পাল্লা সেদিকেই ভারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জয়-পরাজয়ে এসব ফ্যাক্টর সামনে নিয়ে গণসংযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা। তাদের ইশতেহারেও এসব ভোটারকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্র“তি। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করাই বড় চ্যালেঞ্জ। আগের নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতা থেকেই এটি নিয়ে ভাবতে হবে। তর“ণদের মধ্যে ভোটদানের আগ্রহ কম। এ বিষয়টি গুর“ত্বের সঙ্গে নিয়েছেন দুই দলের প্রার্থীরা। তাই ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে নেয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ। ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে প্রার্থীরা বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন। জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মুজমদার বলেন, দু’দলের মেয়র প্রার্থী শিক্ষিত তর“ণ। তাদের ইমেজ ভালো। এ অবস্থায় তাদের জয়-পরাজয়ে প্রধান ফ্যাক্টর দলীয় ইমেজ। পাশাপাশি তর“ণ ও নারী, বস্তিবাসীসহ দরিদ্র শ্রেণির ভোটারও ফল নির্ধারণে ভূমিকা রাখেন। তবে সবকিছু নির্ভর করবে ভোটারদের কেন্দ্রমুখী হওয়ার ওপর। কারণ, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলেই শুধু জয়-পরাজয়ে এসব ফ্যাক্টর কাজে লাগবে। তাই ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে আস্থার পরিবেশ নিশ্চিত করতে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। সংশ্লিষ্টদের মতে, বর্তমানে দুই সিটিতে ভোটার ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন। এবারের সিটি নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন তর“ণ ও নারী ভোটাররা। ২০১৫ সালের তুলনায় চলতি বছর দুই সিটিতে নতুন যুক্ত হয়েছে ১২ লাখ ৪৭ হাজার ভোটার; এদের বেশিরভাগই তর“ণ। এ সময়ে দুই সিটিতে যুক্ত হয়েছে ১৮টি করে ৩৬টি ওয়ার্ড। সেসব ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও জয়-পরাজয়ের অন্যতম নিয়ামক। এ ছাড়া দুই সিটির মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেকই নারী। তাদের সংখ্যা ২৬ লাখ ২০ হাজারের বেশি। কোথাও কোনো অসুবিধা নেই, অবাধে ভোট দিন: সিইসি : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূর“ল হুদা বলেছেন, আশাকরি ১ ফেব্র“য়ারির ঢাকার দুই সিটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। কোথাও কোনো অসুবিধা নেই। ভোটাররা নির্বিঘ্নে অংশগ্রহণ করবেন। নির্বাচন ভবনে শুক্রবার সন্ধ্যায় এক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। সিইসি বলেন, দসকালে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখেছি, নির্বাচনের সামগ্রী বিতরণ দেখেছি। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। কোনো অসুবিধা নেই। মালামাল পৌঁছে গেছে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা বলেছেন কোথাও কোনো রকমের নির্বাচনে বিষয়ে কোনো আশঙ্কা নেই। তিনি বলেন, ‘ভোটাররা নির্বিঘ্নে অবাধে অংশগ্রহণ করবেন। তাদের কোনো অসুবিধা নেই। প্রচারের সময় যেভাবে প্রার্থীরা অংশ নিয়েছেন, ভোটার সমর্থকরা যেভাবে রাস্তায় নেমেছে এসেছে, ওটা একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সব দল অংশ নিয়েছে। ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হলে পরিবেশ সুন্দর হয়। সিইসি বলেন, দপ্রস্তুতি শেষ। সামগ্রী চেলে গেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সকলে যার যার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। সব ধরণের বাহিনী তারা নিয়োজিত রয়েছে। তারা তাদের কাজ পরিচালনা করছে। কেন্দ্রে পুলিশের বির“দ্ধে অভিযোগ থাকে, পক্ষ নিয়ে নেন, ভোটকর্মকর্তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না, এমন হলে কমিশনের ভূমিকা কী থাকবে? প্রশ্নটির জবাবে কেএম নূর“ল হুদা বলেন, ‘এজেন্টদের প্রতি প্রথম অনুরোধ, তারা যেন দায়িত্ব নিয়ে থাকেন। কেউ এসে বললো আর বের হয়ে যাবেন, কেউ তাকে রাখবেন না, তখনই বের হয়ে যাবেন, তা যেন না করেন। এমন ঘটেও, ঘটার সম্ভাবনা যদিও নাই, তবু যদি ঘটেও টহলদার বাহিনী থাকবে, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে, তাদের বলবেন। সুতরাং এটার কোনো সম্ভাবনা নাই। যদি নিজে থেকেই বেরিয়ে না যায় তাহলে কিš‘ এজেন্টদের বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ নাই। সিইসি বলেন, দআইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সঙ্গে বৈঠকের সময় বলেছি-এজেন্টদের শেল্টার দিতে বলেছি। যখনই তারা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ঢুকবে, তখনই তাদের দেখভাল করার দায়িত্ব কিš‘ যারা ভোটকেন্দ্রের দায়িত্ব থাকবেন। এজেন্ট কাউকে না জানিয়ে অনেক সময় বের হয়ে যায়, তখন বলে যে আমাদের এজেন্ট নেই। এমন হলে তো হবে না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ যদি থাকে, যদি না শুনে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করবেন। আমাদের পর্যন্ত আসার দরকার নেই। দায়িত্ব কিš‘ ভোটকর্মকর্তারা নিতে চাননা ভীতিকর পরিস্থতিতে- এমন পরিস্থিতি করণীয় সম্পর্কে সিইসি বলেন, দআমাদের তিন ধরণের ব্যবস্থা আছে। ভোট দেওয়ার পরে কেউ কেন্দ্রে থাকতে পারবে না। জটলা করতে পারবে না। নিষ্প্রয়োজনে বাইরের কোনো লোক যেন কেন্দ্রে না আসে সে বিষয়ে নির“ৎসাহিত করছি। এতেই কাজ হবে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) কন্ট্রোল ইউনিট ওপেন করার পর ব্যালট ইউনিটে একজনের ভোট আরেকজন নির্দিষ্ট প্রতীকে মারতে পারে-এমন বিষয় সামনে আনলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, দনা না না, তা মারতে পারে না। বুথের মধ্যে একজনেরটা মধ্যে আরেকজন পারতে পারে। কিš‘ কে সেটা? যদি সে ভোটার অন্ধ হয়, যদি সে ভোটার অক্ষম হয়, যার হাত ব্যবহার করতে পারে না। আগে যে নিয়মন ছিল সেটাই রাখা হয়েছে। মা যদি অন্ধ হয়, তবে ছেলে যাবে, কিš‘ ব্যবহার হবে মায়েরটা আঙ্গুলের ছাপ, তার ভোটই ওপেন হবে, সেটাতেই ভোট দিতে হবে। তিনি বলেন, দআগে যেমন হতো ছিনতাই টিনতাই হতো। ইভিএম এমন একটি বিষয়, ভোটারকে সেখানে যেতে হবে। ভোটার না গেলেও ভোট হয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল। বিএনপি লেভেল প্লেযিং ফিল্ড নেই বলে অভিযোগ করেছে, সিইসি বলেন-দতারা প্রচার করেছে, মিছিল করেছে, বাড়ি বাড়ি গিয়েছে, কোথায় তাদের বাধা দিয়েছে। এটা ঠিক না। সিইসি বলেন, আশাকরি সুষ্ঠু, নিরপক্ষে ও গ্রহণযোগ নির্বাচন হবে। এতোকিছুর পরে নিরপক্ষে নির্বাচন হবে। সকলের সহযোগীতা দরকার। ইভিএম নতুন একটি প্রযুক্তি। অবশ্যই সকলের সহযোগিতা দরকার। অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে ছিলাম। এখন বিশ্বাস করি কমিশনের একটি স্বপ্ন যে, এটার মাধ্যমে ভোটার তার নিজের ভোট দিতে পারবে। এটাকে সফল করার জন্য সকলের সহযোগীতা করতে হবে। সিইসি, নির্বাচন কমিশনাররা কে কোথায় ভোট দেবেন: শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) কেএম নূরুল হুদা ভোট দেবে উত্তরার ৫ ন¤॥^র সেক্টরের আইটি স্কুলে সকাল ১০টায় ভোট দিতে যাবেন। বিষয়টি জানিয়েছেন সিইসি ব্যক্তিগত সহকারী একেএম মাজহারুল ইসলাম।সিনিয়র নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ভোট দেবেন মগবাজারের ইস্পাহানী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রে। নির্বাচন কমিশনার ড. মো. রফিকুল ইসলাম ভোট দেবেন কলাবাগানের লেক সার্কাস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম ভোট দেবেন গ্রীণরোডের স্টাফ কোয়ার্টারের বেসরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের মহিলা ভোটকেন্দ্রে। আর নির্বাচন কমিশনার শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী ক্যান্টনমেন্টের ভোটার হওয়ায় তিনি ভোট দিতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশনারদের ব্যক্তিগত সহকারীরা জানিয়েছেন, তারা সকালে ভোট দিয়ে অফিসে আসবেন। বিতর্কে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক: সিটি নির্বাচনের পর্যবেক্ষণের সুযোগ পাওয়া দেশি ও বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ। এবার দেশীয় সংস্থার ১০১৩টি ও দূতাবাসের অন্তত ৭০ জন কর্মকর্তা পর্যবেক্ষক পরিচয়পত্র নিয়েছেন। এছাড়া সংবাদিকরাও থাকছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।