শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৬ পূর্বাহ্ন
জামান মৃধা, (ডিমলা) নীলফামারীঃ
হতদরিদ্র ভ্যানচালকের একমাত্র ছেলে রিয়াদ। পশ্চিম ছাতনাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র। স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে মানুষের মত মানুষ হওয়ার। দরিদ্র পিতামাতার মুখে হাসি ফুটানোর। কিন্তু সেটা আর হলো না অসুস্থ রিয়াদের। মাত্র ৮ বছর বয়সেই তার শরীরে বাসা বেঁধেছে জটিল ও কঠিন কিছু রোগ। ডাক্তারী পরীক্ষা নিরীক্ষায় ধরা পড়েছে হার্টে ছিদ্র, দুইটি বাল্বের একটি অকেজো এছাড়া হার্টের রক্তনালী শুকিয়ে গেছে। রিয়াদ দীর্ঘদিন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটালের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মো. নুরুল আক্তার হাসানের তত্ত্বাবধানে ছিলো। তাদের অভিমত তার দুইটি মেজর অপারেশন করাতে হবে। দেশের বাহিরে ওই অপারেশনগুলো করালে ভালো হয়।
রিয়াদ আবারো স্কুলে গিয়ে সহপাঠিদের সঙ্গে বসে লেখাপড়া করতে চায়। সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পাশাপাশি লেখাপড়া করে বড় কিছু হওয়ার স্বপ্ন দেখছে এখনো।
রিয়াদ নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডস্থ বারোবিশা গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে।
রিয়াদের বাবা মো. শরিফুল ইসলাম পেশায় একজন ভ্যানচালক ও দিনমুজুর। জমিজমা বলতে শুধু বসতভিটা। ওই ভিটাতেই জরাজীর্ণ একটি টিনশেড ঘরে বসবাস তাদের। ইতিমধ্যে ছেলের চিকিৎসা খরচ জোগাতে কিছু জমি বিক্রিও করেছেন পিতা শরিফুল ইসলাম। এখন সহায়-সম্বল বলতে বসতভিটার ওই দুটি টিনসেটের চালাঘর। হতদরিদ্র বাবা তার অক্ষমতাকে দায়ী করে ছেলের চিকিৎসার খরচ যোগাতে না পেরে কান্নাকে পুঁজি করে নিয়েছেন। আর আল্লাহকে ডাকছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, রিয়াদ সর্বদাই হাস্যজ্জ্বল ও চঞ্চল প্রকৃতির ছিল। টাকার অভাবে চিকিৎসা অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় তার স্বপ্নও থমকে গেছে। আর বাবা-মা শুধুমাত্র চোখের জল ফেলছে। রিয়াদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রায় ১৫-১৮ লাখ টাকা। কিন্তু তার দরিদ্র পিতা-মাতার পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। পরিবারেও বিত্তশালী কেউ নেই, যে তাকে সাহায্য করবে। রিয়াদের অসুস্থতা পরিবারের সকলকে দুঃখের সাগরে ফেলে দিয়েছে। আমরা স্থানীয়ভাবে সহযোগীতার চেষ্টা করেছি। রিয়াদের চিকিৎসায় সকলের সহযোগীতা প্রত্যাশা করছি আমরা।
শিশু রিয়াদ বলেন, যখন ব্যাথা উঠে তখন খুব কষ্ট হয়। এ কষ্ট সহ্য করার মতো নয়। আমি অসুস্থ থাকতে চাই না। আমি বাঁচতে চাই। আমি স্কুলে গিয়ে সহপাঠিদের সঙ্গে লেখাপড়া করতে চাই। আমি সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে চাই।আমার প্রতি দয়া করুন। আমাকে বাঁচতে সহযোগীতা করুন।
”আমি বাঁচতে চাই। পৃথিবীর আলো-বাতাসে আমি আমার সন্তানকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই”। সন্তানের জীবন রক্ষায় চিকিৎসা সহায়তার জন্য এভাবেই করুণ আকুতি জানিয়েছেন শিশু রিয়াদের দরিদ্র পিতা শরিফুল ইসলাম। তার ভাষ্য মতে, রিয়াদ পড়ালেখায় ভালো ছিল। স্কুলের পাশাপাশি সকালে মাদ্রাসায় যেতেও সে। অত্যন্ত হাস্যজ্জল ও কর্মচঞ্চল এবং দুরন্ত প্রকৃতির ছেলে ছিলো রিয়াদ। ছেলেটি এখন অসুস্থ হয়ে পড়ে আছে। স্বাভাবিকভাবে তাকে সুস্থ দেখা গেলেও হঠাৎ করে তার শরীরে ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। খাবার খেতে কষ্ট হয়। খাবার বমি হয়ে বের হয়ে যায়। পেটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যাথা সহ্য করা তার জন্য কষ্টকর হয়ে পড়ে। ছেলেটিকে সুস্থ করতে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে হাত পেতেছি। সবাই সাধ্যমতো সহযোগীতা করেছে।
তিনি আরো বলেন, এখানকার ডাক্তারেরা বলেছে দেশে অপারেশন করালে বাঁচার নিশ্চয়তা কম। তাই রিয়াদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের নারায়ণা হাসপাতালের ডাঃ দেবী শেঠীর কাছে নিয়ে যেতে চাই। আমি তো দরিদ্র মানুষ! রিয়াদের দুটি মেজর অপারেশন করাতে এতে প্রায় ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু এতো টাকা খরচ করার মতো সামর্থ্য আমার নেই। আমার একমাত্র শিশু সন্তানের চিকিৎসা করাতে সমাজের বিত্তবান, দয়াবান ও দানশীল ব্যক্তিদের সহযোগীতা প্রয়োজন। শিশু সন্তান রিয়াদকে সুস্থ ও হাসি-খুশি দেখতে সর্বস্তরের মানুষের কাছে আকুতি জানিয়েছেন বাবা-মা।
সহযোগীতার জন্য ব্যক্তিগত (১) ০১৭৭৩৯৯০২৪৫ (নগদ) এবং নগদ ও বিকাশ (২) ০১৭৭৭৯৪৬১৪৭ নাম্বারে সাহায্য পাঠাতে অনুরোধ করেছেন রিয়াদের পরিবার।
জামান মৃধা-০১৭৩০-৯৮৩৮৯৭
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।