রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ পূর্বাহ্ন
মনসুর আহহাম্মেদ ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ
শীতকাল আর পিঠা একসূত্রে গাঁথা। গত কয়েকদিন হলো প্রকৃতিতে হালকা শীতের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রকৃতিতে শীতল হাওয়া বইতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে ঠাকুরগাঁওয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে রাস্তার মোড়ে গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ শীতকালীন পিঠার দোকান।
প্রতিদিন বিকাল থেকে এসব দোকানে পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় জমছে মানুষের। বিক্রেতারা পিঠা তৈরি করছেন আর ক্রেতারা দাঁড়িয়ে বা বসে বসে গরম গরম এসব শীতের পিঠার স্বাদ নিচ্ছেন। এ যেন শীতের আরেক আমেজ।
ঠাকুরগাঁও শহর ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন মোড়ে ও পাড়া-মহলস্নায় স্বল্প আয়ের লোকজন গড়ে তুলেছেন পিঠার দোকান। পৌর শহরের আর্ট গ্যালারি মোড়, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, টার্মিনাল এলাকা, পোস্ট অফিস, জজকোর্ট চত্বর, কলেজ মোড়, হাটের রাস্তা এলাকায় এসব পিঠার দোকান রয়েছে। মূলত সেখানে ভাপা ও চিতই পিঠা তৈরি হচ্ছে। রিকশাচালক, দিনমজুর, শিশু-কিশোর, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী সব শ্রেনী-পেশার মানুষ পিঠার দোকানের ক্রেতা।
কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অনেককে আবার পিঠা খেতে দেখা যায়। অনেকে আবার পরিবারের সদস্যদের জন্য পছন্দের পিঠা নিয়ে যাচ্ছেন। পিঠা বিক্রেতা তইমুর রহমান শহরের আর্ট গ্যালারি পাগলু স্টানের মোড়ে চালের গুঁড়া, ভর্তা আর পস্নাস্টিকের পিরিচ সাজাতে ব্যস্ত এরপর গরম কড়াইয়ে চালের গোলা দিয়ে ঢেকে দেন। পিঠাটি খাওয়ার উপযোগী হতে কিছু সময় লাগে। এরই মধ্যেই ক্রেতার ভিড় জমে যায় তার দোকানে।
পত্রিকায় কাগজ দিয়ে ঢাকা পিরিচে পিঠা নেন ব্যবসায়ী ইসমাইল ইসলাম। তিনি পিঠার কোনা ভেঙে ভর্তা মিশিয়ে মুখে পুরে বলেন, ছোটবেলার একটা সুখকর স্মৃতি হচ্ছে শীতের সকালে চুলার পাশে বসে ঝোলা গুড় মিশিয়ে চিতই পিঠা খাওয়া। গ্রাম থেকে শহরে এসে পিঠার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা ভর্তা।
তিনি জানান, যেহেতু এটা শীত মৌসুম বাসাবাড়িতে তো পিঠা বানায় সেটার একটা স্বাদ আর এখানকার পিঠার মধ্যে স্বাদের বেশ পার্থক্য। বাসাবাড়ির পিঠায় সাধারণত আইটেমটা কম থাকে। আর এখানে যে পিঠা তৈরি হয় বিশেষ করে এখানকার ভর্তার আইটেমটা অসাধারণ, চার-পাঁচটা আইটেমের ভর্তা থাকে সবগুলোই আলাদা আলাদা সাধের সবকিছু মিলে এখানে বসে পিঠা খাওয়ার চমৎকার একটা পরিবেশ মনে হয়। আরেক জন সালাম মিয়া জানান, বাসাবাড়িতে পিঠা বানানো বেশ ঝামেলার। খেতেও তো ইচ্ছে। তাই কী আর করা। দোকান থেকেই কিনে খাই। পথচারী রফিক উদ্দিন জানান, তিনি প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার পথে দুটি চিতই পিঠা খান। পুরো শীতকাল সন্ধ্যার নাশতা পিঠা দিয়েই সারেন। পাশ থেকে আরেকজন বলেন, ঘরে পিঠা বানানোর রীতি উঠে যাচ্ছে। সেটা পুষিয়ে দেয় রাস্তার পাশের এই দোকান গুলো।
পিঠা বিক্রেতা তইমুর রহমান জানান, এবার শীত শুরু হাওয়ার আগেই প্রচুর পিঠা বিক্রি হচ্ছে। বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পিঠা বিক্রি হয়। তবে রাতে পিঠার চাহিদা বেড়ে যায়। তাই আয়ও এবার একটু বেশি হচ্ছে। প্রতিদিন ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা লাভ হচ্ছে।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।