দৈনিক পরিবর্তন -(জামান মৃধা, ডিমলা থানা প্রতিনিধি)
কিস্তির জন্য বাড়ী ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বসে আছেন এনজিও কর্মীরা
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে জুন পর্যন্ত সব এনজিওর কিস্তি আদায় কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু সেই নির্দেশনা অমান্য করে নীলফামারী জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কিস্তি আদায়ের জন্য গ্রাহকদের চাপ দেয়া হচ্ছে।
কিস্তি আদায়ের জন্য গ্রাহকদের বাড়িতে ও বিভিন্ন ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বসে থাকা ও হুমকি প্রদানের অভিযোগও পাওয়া গেছে। অথচ আয় ও ব্যবসা বন্ধ থাকায় কিস্তি দেয়া নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন গ্রাহকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা যেমন, আশা,সাফ ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংক, পপি, ব্যাংক ও নামে বেনামে গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন সুদারু কোম্পানির মাঠপর্যায়ের কর্মীরা কিস্তি আদায়ের জন্য গ্রাহকদের চাপ দিচ্ছেন। অনেকের কাছ থেকে কিস্তি আদায় করেছেন।
ডিমলা উপজেলার নাউতারা, ছাতনাই,বালাপাড়া,কালিগঞ্জ, টেপাখড়িবাড়ী,খগাখরিবাড়ী, খালিশাচাপানী ও গয়াবাড়ীর বেশ কয়েকটি স্থানে গ্রাহকদের কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য দোকানে ও বাড়িতে গিয়ে চাপ দিচ্ছেন এনজিও কর্মী/ কর্মকর্তারা। আবার সময়মতো কিস্তি পরিশোধের জন্য ফোন করছে কোনো কোনো সংস্থা।
উপজেলার গয়াবাড়ী ইউ- নিয়নের (শুটিবাড়ী) বাজারের সাহিন খান ছোটখাতা গ্রামের শামীম আহমেদ বলেন, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ব্যবসা করে সংসার খরচ ও সপ্তাহে ১৫০০ টাকা কিস্তি পরিশোধ করেছি। প্রায় দুই মাস করোনাভাইরাসের কারণে এনজিওর কিস্তি বন্ধ ছিল। কিন্তু ইদের পর থেকে এনজিও সংস্থা আশার কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেয়া শুরু করেছে।
ডিমলার টেলিকম ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বলেন, টানা লকডাউনের জন্য দোকান খুলতে পারিনি। এ কারণে আমাদের আয়-রোজগার কমে গেছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকদিন ধরে পপি ও ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন সুদারু কোম্পানির কর্মীরা কিস্তির জন্য দোকানে এসে চাপ দিচ্ছেন না দিলে দোকানে বসে থাকে ও খারাপ আচরণ করে। এমন কি মামলার হুমকি পর্যন্ত প্রদান করে।
ছাতনাই ইউনিয়নের তিস্তা- পাড়ের ঝাড়সিংহে সোয়েব মিয়া বলেন, আশা ব্যাংক থেকে কিস্তি আদায়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। মানসিক চাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে তারা। কি করব বুঝতেছি না।
জানতে চাইলে এনজিও সংস্থা গ্রামীণ ব্যাংক শুটিবাড়ী শাখার ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের গ্রাহকদের কাছে মাঠকর্মীরা যাচ্ছেন ঠিকই তবে যারা স্বেচ্ছায় কিস্তি দেন তাদের কিস্তি নেয়া হয়। কোনো প্রকারের চাপ সৃষ্টি করা হয় না। আমাদের শাখার প্রায় ৩ (তিন) হাজার গ্রাহক। করোনা পরিস্থিতিতে অর্ধেক গ্রাহকও কিস্তি দেননি।
এনজিও সংস্থা আশা ডালিয়া শাখার ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী আমাদের কার্যক্রম চলছে। কোনো জোর-জবরদস্তি করা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়শ্রী রানী রায় বলেন, এ নিয়ে অভিযোগ পাইনি এখনও। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে লাইসেন্সও বাতিল করা হবে।
নিউজ রুমঃ [email protected] অথবা [email protected]
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com