মোঃ শিহাব উদ্দিন গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।
টাকার অভাবে না খেয়ে দিন পার করছে সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশি রেমিটেন্স যোদ্ধারা। মানবতার জীবন-যাপন করছে তারা। ভিডিও বার্তায় জানালেন গোপালগঞ্জ সহ অন্যান্য ভুক্তভোগীরা।
গোপালগঞ্জের মামুন ওরফে সাগর, আরেক ছদ্মনাম আব্দুল্লাহ সৌদি অরবে এএজিসি ও এসিটি সাপ্লাইয়ার কোম্পানীর পরিচালক। সৌদি আরবে গোপালগঞ্জ সহ সারা দেশের প্রায় ১০০ জন রেমিটেন্স যোদ্ধাদের কষ্টে অর্জিত বেতনের কারো ৩ মাসের, কারো ৫ মাসের টাকা নিয়ে উধাও গোপালগঞ্জের এই মামুন। টাকার অভাবে না খেয়ে মুখ বুঝে কাঁদছে প্রবাসের মাটিতে রেমিটেন্স যোদ্ধারা। তারা তাদের কষ্টে অর্জিত টাকা ফেরত ও দোষিদের শাস্তির দাবিতে সৌদি আরব থেকে ভিডিও বার্তায় এসব তথ্য জানান। তারা আরো জানান, আমরা আমাদের পরিবার ও দেশের জন্য বিদেশের মাটিতে কাজ করতে এসে প্রতারিত হয়েছি। আমরা প্রতারক মামুন ওরফে সাগরের শাস্তির দাবিতে গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ প্রশাসনের সাহায্যে কামনা করছি।প্রবাসীদের ভিডিও বার্তায় আরো জানা যায়, গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলা পূর্ব নিজড়া গ্রামের হান্নান শেখের ছেলে সাগর ওরফে মামুন, তার পাসপোর্ট নং-ইএম০৩২৬৭৮৫। গোপালগঞ্জের নিজড়া প্রতারকের নিজ বাড়ি হলেও পাসপোর্টের ঠিকানা দেওয়া টুঙ্গিপাড়া গোপালগঞ্জ। সে সৌদি আরবে এসিটি ও এএজিসি নামক সাপ্লায়ারের মালিক হয়ে গোপালগঞ্জে সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকাতে যাওয়া সৌদী প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যোগদান করিয়ে মাসের পর মাস কাজ করিয়ে মূল কোম্পানীর নিকট হতে বেতন তুলে উধাও হয়ে গেছে। এই প্রতারক মামুন প্রবাসীদের কষ্টে অর্জিত ১০০ জনের বেতনের প্রায় ২ কোটি ৫০ লক্ষাধিক টাকা অত্মসাত করে পালিয়ে যায়।প্রতারক মামুনের প্রতারণার শিকার গোপালগঞ্জ জেলা সদরের শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি সৌদির রিয়াদে গোপালগঞ্জের নিজড়ার মামুন ওরফে সাগর পরিচালিত এএজিসি নামক এক কোম্পানীর মাধ্যমে একটি সোলার প্লান্টে কাজ করি। আমার বেতন মাস শেষে মূল কোম্পানি পেমেন্ট করলেও ঐ বেতন এএজিসি (সাপ্লাইয়ার)কোম্পানির পরিচালক মামুন উঠায়। আমার বেতনের তিন মাসের ৯০০০ রিয়েল যার বাংলাদেশ টাকার পরিমাণ প্রায় ৩ লক্ষ টাকা আমাকে না দিয়ে সে পালিয়ে যায়। তিনি এএজিসি এমডি মামুনকে কুকুরের সাথে তুলনা করে বলেন, আমরা টাকার অভাবে বিদেশের মাটিতে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছি আর ঐ প্রতারক আমাদের ঘামে ঝরা টাকায় বাংলাদেশে তার বোন জামাই আল-আমিন সোহেলকে দিয়ে ঢাকার কাপড়ের ব্যবসা করাচ্ছে। গোপালগঞ্জ সদরের ঘোষের চর মৌলভি পাড়া তার শ্বশুর বাড়ি, সে আমাদেরকে এই ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে। প্রতারক মামুনের সাথে জড়িত রয়েছে ওর বোন জামাই মো. আল-আমিন(সোহেল), তার সাথে আরো জড়িত তার স্ত্রী রিতু, ভাই সোহাগ, ও তার শ্বশুর মনির মোল্লা। আমরা আমাদের কষ্টে আর্জিত টাকা ফেরত সহ আমাদের পরিবারকে কাঁদিয়ে আমাদের টাকা যে সকল পরিবার ভোগ করছে, তাদের সকলের শাস্তি দাবি করছি প্রশাসনের নিকট।প্রতারক মামুনের শিকার গোপালগঞ্জ জেলা সদর বেদগ্রমের রায়হান হোসেন এর ৩ মাসের বেতনের টাকা একই কায়দায় তুলে নিয়ে পালিয়ে যায়।এ ব্যপারে রাজবাড়ি জেলার ভুক্তভোগী মো. রেজাউল মল্লিক বলেন, আমি সৌদী আরবে এসে একটা সাপ্লায়ারের মাধ্যমে কাজ করছি নাম রিয়াদের এএজিসি, এর পরিচালক মামুন ওরফে সাগর তার বাড়ি গোপালগঞ্জের নিজড়া, তার বাবার নাম আব্দুর হান্নান শেখ, সে আমাদের ৩ মাসের স্যালারি নিয়ে পালিয়ে গেছ।সে আমার টাকাসহ প্রায় শত জনের টাকা নিয়ে পালিয়েছে।সে এখন মদিনায় আছে। আমরা সবাই গোপালগঞ্জ জেলার প্রশাসনের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন আমাদের পাওনা বুঝিয়ে দেওয়া হয়।গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ার হানিফ শেখ নামক ভুক্তভোগী বলেন, আমি পাঁচ মাস যাবৎ সৌদী আবে এসেছি, এখানে এসে এসিটি(সাপ্রায়ার)এর মাধ্যমে কাজ শুরু করি, যার পরিচালক সাগর ওরফে মামুন সে প্রতি মাসে আমাদের বেতনের টাকা উঠিয়ে আমাদেরকে দেয় নাই। আমরা টাকার অভাবে না খেয়ে ১৪ ঘন্টা ডিউটি করেছি, বাসা ভাড়া দেওয়ার জন্য দেশ থেকে টাকা এনে পরিশোধ করেছি।আমরা অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। আমাদের এই টাকাটার ব্যবস্থা করতে পারলে সৌদি থাকতে পারতাম। আমরা বাধ্য হয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে আমাদের টাকাটা ফেরত পাই।
গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ার বাশবাড়িয়া এলাকার তুহিন বলেন, আমি সৌদি আরব এসে এসিটি কোম্পানির মাধ্যমে কাজ করেছি, যার মালিক সাগর ওরফে মামুন ইম তিন মাস কাজ করার পর বেতন নিতে গেলে সে আমাকে বরে তোদের পেটে ভাতে কাজ করিয়েছি তোদের কোন আকামা নাই, তাই বলে আমাদেরকে খেদায় দেছ, আমাদের এখন খাবার টাকাটা নাই, কাজ শেষ করে বাসায় যাওয়ার টাকাটাও নাই। আমরা এর প্রতিকার চাই।
এ ব্যপারে নারায়ণ গঞ্জের আরো এক ভুক্তভোগী বলেন, আমি এদেশে এসে ডাবল এসিটি পরিচালক মামুন ওরফে সাগরের মাধ্যমে কাজ করি, তার বাড়ি গোপালগঞ্জের নিজড়া গ্রামে সে আমার তিন মাসের স্যালারি না দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে আমরা মানবতার জীবন-যাপন করছি। আমরা এর সুষ্ঠ বিচার চাই।

নিউজ রুমঃ News.dainikparibarton@gmail.com অথবা News@dainikparibarton.com
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com