প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২১, ২০২৪, ৮:২৬ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ অগাস্ট ৩০, ২০২০, ১:৫৬ পি.এম
সরকারী বিধি-নিষেধ অমান্য করে সাতক্ষীরার ধুলিহর-ব্রহ্মরাজপুরে চলছে কোচিং বানিজ্য
পরিবর্তন ডেস্কঃ বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যেই সাতক্ষীরার ব্রহ্মরাজপুর বাজারে থেমে নেই কোচিং বাণিজ্য। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে সুকৌশলে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনেও কোচিং বাণিজ্য চালাচ্ছেন কিছু অসাধু শিক্ষক! গত ১৫ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখার উপসচিব মো. আবু নাসের বেগ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে শিশুদের সুরক্ষার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা নিজ-নিজ বাসস্থানে অবস্থান করবে। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীদের বাসস্থানে অবস্থানের বিষয়টি অভিভাবকরা নিশ্চিত করবেন। কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উক্তএলাকায় কোচিং চলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। এলাকাবাসীর অভিযোগ জেলার অধিকাংশ উপজেলাতেই কোচিং বাণিজ্য চলছে। বিশেষ করে সাতক্ষীরা সদর হতে মাত্র ৭/৮ কিলোমিটার দূরে ধুলিহর/ব্রহ্মরাজপুর বাজারে বহাল তবিয়তে চলছে এই কোচিং বাণিজ্য। সম্প্রতি উক্ত এলাকার কয়েকজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও এই সব শিক্ষক নামের কলুষিত ব্যক্তিদের ভিতরে সচেতনতার প্রভাব মেলেনি বিন্দু পরিমানে ! প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে তাদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রেখে নিজেদের বাড়িতেই অন্য শিক্ষকদের সাথে নিয়েই স্বল্প জায়গাতে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কোচিং বানিজ্য। এমনকি ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ি গিয়ে ও মুঠো ফোনের মাধ্যমে অভিভাবকদের বুঝানো হচ্ছে ভূল পথে এবং যারফলে অনিচ্ছা স্বত্বেও পিতামাতার বাধ্যবাধকতায় শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে উপস্থিত হতে হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, একাধিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোচিং চলায় বজায় থাকছে না সামাজিক দূরত্ব , চিন্তিত থাকছেন তারা । যেখানে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দেন, সেখানে কিভাবে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কোচিং সেন্টার চালায় এমন প্রশ্ন মানুষের মুখে মুখে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে জেলার সব কোচিং সেন্টার বন্ধসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনপ্রনয়নকারী সংস্থা, প্রশাসন বিভাগের কাছে বিনীত দাবি জানান সচেতন মহল।
কেনো আমরা মনে করি কোচিং করানোর পরিবেশ এখনো সৃষ্টি হয়নিঃ
১। করোনার মধ্যে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি নতুন করে বাড়িয়েছে সরকার। এই সময়ে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বাড়িতে থাকারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই সময়ে দেশের সব রকমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। সুতরাং কোচিং চালানো অবৈধ এবং উক্ত অঞ্চল কে নতুন করে ঝুঁকিতে ফেলার একটা মাধ্যম হতে পারে।
২। ভারত, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিচালিত সাম্প্রতিক কিছু গবেষণার দাবি, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা কমিয়ে দিয়ে শীতকালে এ ভাইরাসটির প্রভাব আরও বাড়তে পারে। ভারতের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় আইআইটি-ভুবনেশ্বর এবং এআইআইএমস– এর গবেষকদের একটি দল সম্প্রতি ওই দেশের নীতিনির্ধারকদের দেশটিতে বর্ষা ও শীতের সময় কোভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। *বাংলাদেশেও সামনে শীতকাল সুতরাং আমাদের সাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতেই হবে, কোচিং পরিবেশে সেটা একবারেই অসম্ভব।
৩। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের এ সময়ে সব মানুষ এক ধরনের আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত সব শ্রেণির শিক্ষার্থীই দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে ইনশা-আল্লাহ। *এজন্য সুদিনের জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের ঘরে থাকায় শ্রেয়, কেননা সামান্য অসচেতনতার কারনে একজন মাকে আজীবন কাঁদতে হতে পারে।
৪। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা করোনার ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত সবাইকে সতর্কতা বজায় রেখে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। রোববার (৩০ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।* কোচিং প্রতিষ্ঠান গুলোতে স্বল্প পরিসরে গাঁ-ঘেষে বসতে হয়, এজন্য নূন্যতম দূরুত্ব ও বজায় রাখা অসম্ভব, সতর্কতার যথেষ্ট অভাব এখান পরিলক্ষিত।
৪। একজন শিক্ষার্থী যদি অসুস্থ হয় এবং সে লজ্জায় গোপন রাখে, নিয়মিত কোচিং -এ পড়তে আসে অন্য শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হবার ঝুঁকি প্রবল। এভাবেই প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর বড় একটা অংশ আক্রান্ত হয়ে পড়তে পারে। সুতরাং কোচিং সেন্টার বা তার পরিবর্তে ৫০/৬০ এর অধিক শিক্ষার্থী নিয়ে বাড়িতে কোচিং করানো যতদ্রুত সম্ভব বন্ধ করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের সুদৃষ্টি অপরিহার্য উক্ত অঞ্চল কে নিরাপদে রাখতে , বিষয় টি খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের প্রতি বিশেষ অনুরোধ রেখেছেন উক্ত অঞ্চলের সচেতন মহল ।