শিশুর মুখে আধো আধো বোল, প্রথম মা-বাবা ডাক, প্রথম বসতে শেখা, প্রথম হাঁটা—পরিবারের সবার জন্য এ এক পরম আনন্দের ও কৌতূহলের বিষয়। অনেক মা-বাবা এই বিশেষ দিনগুলোকে ডায়েরি বা অ্যালবামে স্মৃতি হিসেবে রেখে দেন। জেনে রাখুন, এ বিষয়গুলো কবে কখন কীভাবে ঘটেছে, তা সংরক্ষিত রাখাই ভালো। কেননা, চিকিৎসকেরাও এতে বুঝতে পারেন শিশুটির যথাযথ বিকাশ হচ্ছে কি না।
একটি শিশুর বিকাশ ও বৃদ্ধি যেকোনো সময় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমন হতে পারে যে ৮ বা ৯ বছর পর্যন্ত সব ঠিক ছিল, কিন্তু তারপর আর সব ঠিকঠাক হচ্ছে না। কারও কৈশোর প্রাপ্তিতে দেরি হয়ে যায়। তখনই আমাদের জানার প্রয়োজন পড়ে আগে কী হয়েছিল।
* ৭ মাস বয়সে একটি শিশু কোনো রকম সাহায্য ছাড়াই বসতে শেখে। এ সময়েই সে অন্যের চেহারা, ভাবভঙ্গি দেখে নিজের আবেগ যথাযথ প্রকাশ করতে পারে। আবেগ অনুভূতির সঠিক ধারণা পেতে প্রায় ৯ মাস লেগে যায়। ৯ মাসের দিকেই সে আঙুল দিয়ে কোনো বস্তু ধরার ও বসে যেকোনো দিকে ঘুরে তাকানোর দক্ষতা অর্জন করে বলে নানা বিষয়ে কৌতূহলী হয়ে ওঠে।
* ৮ মাস বয়সে কোনো কোনো শিশু হামাগুড়ি দিতে শেখে ও কারও হাত ধরে দাঁড়াতে পারে। প্রথম জন্মদিনের আগে-পরে সে নিজ থেকে হাঁটতে শেখে। এই লক্ষণগুলো তার স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ কতটা পরিণত হচ্ছে তা নির্দেশ করে।
সঠিক সময়ে হাঁটতে না পারা বা কথা বলতে না পারা মানেই যে শিশু বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তা কিন্তু নয়। নানা কারণেই এই বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এর অনেকগুলোর সুচিকিৎসাও আছে।
অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের বিকাশের ধাপগুলোর দিকে লক্ষ রাখা। বিকাশ ধীর মনে হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারেন। ৬ মাস অন্তর শিশুর উচ্চতা ও ওজন মেপে তা লিখে রাখা ভালো। এতে তার বৃদ্ধির হার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। অপুষ্টি থেকে শুরু করে নানা ধরনের দীর্ঘমেয়াদি রোগ, হরমোনের সমস্যা, জিনগত ত্রুটি ইত্যাদির কারণে শিশুর বৃদ্ধি পদে পদে বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তার কারণ অনুসন্ধানের সময় আপনার শিশুর এই ছোটবেলার বৃদ্ধি দিনলিপি কাজে লাগবে। তাই বাড়িতে এ রকম একটা অ্যালবাম বা ডায়েরি থাকা মন্দ নয়।
অধ্যাপক প্রণব কুমার চৌধুরী, বিভাগীয় প্রধান, শিশুরোগ বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
নিউজ রুমঃ [email protected] অথবা [email protected]
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com