হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার লেলিন চৌধুরী।
ঢাকা: বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গণপরিবহন ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে যে অবস্থার সৃষ্টি করা হয়েছে, তা আংশিক কার্যকর হচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার লেলিন চৌধুরী।
এর বদলে দেশব্যাপী কারফিউ জারি করা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।
দেশে ক্রমাগত করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ার প্রেক্ষাপটে বাংলানিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডাক্তার লেলিন চৌধুরী বলেন, প্রতিদিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা সংক্রান্ত ব্রিফিং থেকে আমরা যে তথ্য পাই, তা পুরো দেশের চিত্র নয়। ব্রিফিং থেকে আমরা আংশিক তথ্য পাই। এই আংশিক তথ্য থেকে প্রাপ্ত সংখ্যাই কিন্তু বিস্ফোরণের দিকে যাচ্ছে। এখনই যদি আমরা এটা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হই, তাহলে সেটা আমাদের জন্য বড় বিপদ বয়ে আনবে। আমরা যে সফল হব, সেটারও নমুনা কম দেখা যাচ্ছে। যেমন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জানাজা, গার্মেন্টস শ্রমিকদের ঢাকায় নিয়ে আসা, গণপরিবহন খোলা রেখে সাধারণ ছুটি ঘোষণা, রাজনৈতিক একজন নেতার মুক্তি উপলক্ষে গণজমেয়েতের সুযোগ, ত্রাণের নামে বিভিন্নস্থানে জমায়েত, সরকারের পারসোনাল প্রটেক্টিভ ইক্যুপমেন্টের পরে প্রশাসনের লোকজনকে বাজার করতে এবং ফটোশেসন করতে দেখা যায়। এর অর্থ হচ্ছে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য যে সিরিয়াসনেসের কথা মুখে বলি, বাস্তব কাজের ক্ষেত্রে ততটাই অভাব রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মানুষের ক্ষুধা, জীবন যাপনের দৈনিন্দন অত্যাবশ্যকীয় উপাদানগুলোর নিশ্চয়তার বিধান না করে লকডাউন করে মানুষকে বাড়িতে রাখা সম্ভব না। এ জন্য যেসব স্থানে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে, যেসব স্থানে কারফিউ জারি করা উচিৎ। পাশাপাশি যাদের খাবার প্রয়োজন জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তাদের কাছে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলেই লকডাউন সফল হবে।
ডা. লেলিন বলেন, সংস্কৃতে বলা হয়েছে- যস্মিন দেশে যদাচার, অর্থাৎ যেমন দেশ তেমন আচরণ, যে আচরণ ইংল্যান্ড বা সুইডেনের জন্য প্রযোজ্য সে আচরণ বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য নয়। কারণ বাংলাদেশের মানুষের চারিত্রিক ধরণ এবং সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য ভিন্ন। সুতরাং এমন দুর্যোগকালে আইন মানতে দেশের জনগণকে বাধ্য করতে হবে। এই জন্যেই আমি বলছি কারফিউ দেওয়া উচিৎ। দেশের মানুষ প্রথমবারের মত লকডাউনের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। এ দেশের মানুষ কারফিউ সম্পর্কে জানে, লকডাউন জানে না। এছাড়া লকডাউন সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে ধারণাও দেওয়া হয়নি। সেই কারণেই সেভাবে ধারণ করেনি। মানুষ ভেবেছে এটা ছুটি, মাঝে মাঝে বের হওয়া যাবে, বাজারঘাট করা যাবে।
তিনি বলেন, আমরা যদি নারয়ণগঞ্জে কারফিউ দিতে পারতাম এবং সেখানে প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার বা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কার্যকরী উদ্যোগ থাকতো, তাহলে সেখানে আমরা এই লকডাউনকে ৯০ শতাংশ সফল করতে পারতাম। আর এখন যেটা হচ্ছে তাকে ৪০ ভাগ সফল বলাও কঠিন।
নিউজ রুমঃ [email protected] অথবা [email protected]
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com