প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে পুরো বিশ্ব থমকে গেছে। নানা ধরনের সংকটে মানুষের জীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। এমন পরিস্থিতিতে যেখানে সবাইকে সব ধরনের বিভেদ ভুলে গিয়ে একসঙ্গে কাজ করা ছাড়া কোনো পথ নেই এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও প্রত্যেকের সচেতনতা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে অপরিহার্য। সেখানে যদি পারিবারিক সহিংসতা বাড়ে তবে বিষয়টি কতটা আশঙ্কাজনক তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এমন বিষয় আলোচনায় এসেছে যে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে লকডাউনে রয়েছে বিশ্বের বহু দেশ। আর এ সময় ঘরের ভেতর যারা পারিবারিক ও যৌন নির্যাতনের মুখে পড়ছেন তারা এই মহামারির নীরব শিকার বলে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। প্রসঙ্গত বলা দরকার, কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে যখন লকডাউনসহ নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে তখন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা- এই বিষয়টি কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। আর এটা নিয়ে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এক বিবৃতিতেও তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া আমলে নেওয়া দরকার, বিশ্বের দেশগুলোতে পারিবারিক সহিংসতা কমিয়ে আনার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বানের ওপর গুরুত্বারোপ করে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন সরকারকে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। আমরা বলতে চাই, করোনাভাইরাস যখন মহামারি আকারে রূপ ধারণ করেছে, দেশেও মৃতু্যর সংখ্যা বাড়ছে তখন এই ভয়াবহতার মধ্যে আবার যদি পারিবারিক সহিংসতা বাড়ে তবে বিষয়টি অত্যন্ত ভয়ানক পরিস্থিতিকেই স্পষ্ট করে। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার সার্বিক এ পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে কাজ করা।
উলেস্নখ করা দরকার, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, গত মার্চে বগুড়া, জামালপুর ও কক্সবাজারে ৩৬টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এবং একই সময়ে এ তিন জেলায় পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৩০০টি। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন সরকারকে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে সব পর্যায়ে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের আইনি সহায়তা প্রদানে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে গতিশীল করার যে আহ্বান জানিয়েছে তা আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হতে হবে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার ভেতর যদি পারিবারিক সহিংসতার মতো ঘটনা ঘটতে থাকে তবে এমন ভীতিকর অবস্থাকে সামনে আনবে যার ফলে আরও বেশি সংকট সৃষ্টি হবে। আমরা বলতে চাই, যখন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক বলেছেন, বহু নারী ও শিশু দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার শিকার হচ্ছেন- যা উদ্বেগজনক। ঘরে বন্দি হয়ে পড়ায় তারা এ বিষয়ে জানাতে ও আইনি পদক্ষেপ নিতে পারছেন না বলেও তিনি জানিয়েছেন। সঙ্গত কারণেই এই বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সবাইকে বাসায় থাকতে বলা হয়েছে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য আসতে শুরু করছে, পারিবারিক নির্যাতনের পরিমাণ বাড়ছে। এই সংকটকালেও পারিবারিক নির্যাতনের অভিযোগ পেলে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের সার্বিকভাবে তৎপর থাকতে হবে যেন এই সংকটে কেউ পারিবারিক সহিংসতার মতো ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে। এমন হলে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এমনিতেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণে পুরো বিশ্ব বিপর্যস্ত, দেশেও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, এর মধ্যে কেউ পারিবারিক সহিংসতার মতো ঘৃণ্য তৎপরতা চালিয়ে যাবে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখা জরুরি।
নিউজ রুমঃ [email protected] অথবা [email protected]
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com