পরিবর্তন ডেস্কঃ পৃথিবী এগিয়েছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে বলতে গেলে পুরো পৃথিবী এখন মানেুষের হাতের মুঠোয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই জয়জয়কারের সময়েও পৃথিবীর নানা রহস্যের জট খোলা সম্ভব হয়নি। এমন একটি রহস্যের নাম হলো মেক্সিকোর গভীর অরণ্যের গ্রাম ‘টিলটেপেক’। যে গ্রামের কোনো প্রাণীই চোখে দেখতে পায় না, বিশ্বাস হয়? বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও সত্যি সত্যিই এমন গ্রামের অস্তিত্ব রয়েছে।
জানা গেছে, ‘টিলটেপেক’গ্রামের মানুষ থেকে শুরু করে পাখি, গবাদি পশু, বন্যপ্রাণী কেউই চেখে দেখতে পায় না। মেক্সিকোর গভীর অরণ্যে অবস্থিত এ গ্রামটি সভ্যতা ও উন্নয়ন থেকে আলোকবর্ষ দূরে। পৃথিবী নামক গ্রহে যেখানে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যায় ব্যাপক অগ্রগতি সেখানে এই পৃথিবীরই একটা গ্রামের কোনো মানুষ বা প্রাণী চোখে দেখতে পায় না।
মেক্সিকোর গভীর অরণ্যে থাকা এই গ্রামে ‘জাপেটেক’ প্রজাতির বাস। প্রায় ৩০০ টিরও বেশি ‘জাপেটেক’ পরিবার এই গ্রামে বাস করেন। ‘টিলটেপেক’ গ্রামে প্রায় ৭০ টি কুঁড়ে ঘর রয়েছে। কিন্তু কোনো ঘরেই দরজা জানালা নেই। এই গ্রামে জন্ম নেওয়া প্রায় সব শিশুই প্রাথমিকভাবে সুস্থ ও সবল হয়। কিন্তু জন্মের এক সপ্তাহের মধ্যেই এসব শিশুরা দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে।এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, তাদের গ্রামে পাখি উড়ে না। পাখি উড়ার সময় বড় বড় গাছে ধাক্কা খেয়ে সেখানেই মারা যায়।
রহস্যজনক এই খবর দেখে পাঠকদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে এই গ্রামের মানুষ খায় কী? বা তারা বাঁচে কীভাবে? এই গ্রামের বাসিন্দারা মূলত শিম, বাজরা ও লঙ্কা খেয়ে দিনযাপন করেন। তারা প্রচুর পরিমাণে মদও পান করে। মদ খেয়ে আগুনের চারপাশে নাচ করা এই গ্রামের অন্যতম উৎসব।
‘টিলটেপেক’ গ্রামের মানুষ বা প্রাণীর অন্ধ হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করতে গেলে স্থানীয়রা জানান, একটি অভিশপ্ত গাছের কারণেই এই গ্রামের সব প্রাণী অন্ধ। তাদের বিশ্বাসমতে এই অভিশপ্ত গাছের নাম ‘লাভজুয়েলা’। বিজ্ঞানীরা এখনো এই গাছের অস্তিত্ব না পেলেও স্থানীয়দের দাবি গাছটি গ্রামের মধ্যেই রয়েছে।
তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘টিলটেপেক’ গ্রামের বাসিন্দাদের অন্ধ হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে ‘ব্ল্যাক ফ্লাই’ নামক একটি বিষাক্ত মাছি। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, মেক্সিকোর ওই জঙ্গলে প্রচুর পরিমাণে ব্ল্যাক ফ্লাই মাছি রয়েছে। এই বিষাক্ত মাছির কামড়ে সারা শরীরে জীবাণু ছড়ায়। জীবাণুর প্রভাব এতই বেশি, এর সরাসরি প্রভাব পড়ে চোখের স্নায়ুর ওপর। তবে এর বিপক্ষ মতও রয়েছে।
মেক্সিকো সরকার যখন প্রথম ‘টিলটেপেক’ গ্রাম সম্পর্কে জানতে পারে তখন ওই গ্রামের বাসিন্দদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গ্রামবাসীদের অনেকে অসুস্থ হয়ে যান। বেশ কয়েকজন মারাও যান। এর পর তাদের আবার ‘টিলটেপেক’ গ্রামে ফিরিয়ে দিয়ে আসা হয়।
নিউজ রুমঃ [email protected] অথবা [email protected]
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com