নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপিকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করতে উঠে পড়ে লেগেছে একটি চক্রান্তকারী মহল। এই এলাকায় দল গতিশীল ও শক্তিশালী হোক তা কিছুতেই চায় না চক্রটি। তারা চায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে এলাকায় নিজেদের আধিপত্য গড়ে তুলতে। এজন্যে তারা জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে নেমেছে। তাদের চরিত্রহনন করছে। বিশেষ করে দলের জন্য নিবেদিত প্রাণের নেতা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবিরের বিরুদ্ধে যেনো আধাজল খেয়ে নেমেছে এই দুর্বত্ত দল। কোনো কিছুতেই থামাতে না পেরে তার বিরুদ্ধে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে লিখিতভাবে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করা হয়েছে। ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সফিউদ্দিন আহাম্মেদকে নানা রকমের লোভ-লালসা দেখিয়ে নগদ অর্থের বিনিময়ে এই অভিযোগটি করানো হয়েছে। যা সর্বৈব মিথা ও বানোয়াট। তাছাড়া অভিযোগকারী সফিউদ্দিন বিগত ১৫ বছর পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের যোগসাজশে এবং তাদের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে থেকে যত রকমের অবৈধ সুযোগ-সুবিধা আছে সব তিনি নিয়েছেন। এখন বিএনপির একজন সাবেক শীর্ষস্থানীয় নেতার এক রাজনৈতিক প্রতিবন্ধি পুত্রের জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন প্রাপ্তির খায়েস মেটাতে তার হয়ে কাজ করছেন এই সফিউদ্দিন আহমেদ। এজন্যে এস এ জিন্নাহ কবিরসহ জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে যেনো জিহাদ ঘোষণা করেছেন সাবেক কেন্দ্রীয় নেতার রাজনৈতিক প্রতিবন্ধি এই পুত্র। তিনি শুধু দলের হাইকমান্ডের নিকট ভুয়া অভিযোগ করিয়েই ক্ষান্ত হননি, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলসহ নানা মিডিয়ার মাধ্যমে জিন্নাহ কবিরের বিরুদ্ধে মানহানিকর অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। অথচ এই সাবেক কেন্দ্রীয় নেতার পুত্রের সাথে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির কার্যক্রমের কোনো সম্পর্ক নেই। নেতাকর্মীদের সুখ-দুঃখ, আচার-অনুষ্ঠান কিংবা দলীয় কোনো প্রোগ্রামে আজ পর্যন্ত ভুলেও কখনো অংশগ্রহণ করেননি। বছর দুয়েক বিদেশে থেকে আসা এই রাজনৈতিক প্রতিবন্ধি বেশিরভাগ সময় ঘরের ভিতরে শুয়ে-বসেই সময় কাটান। তার একমাত্র কাজ হলো- জেলা বিএনপির শীর্ষনেতাদের চরিত্র হনন করে তাদের বিরুদ্ধে ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন পেশ করা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ -....... (ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয়) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেন- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবির। এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না সেই রাজনৈতিক প্রতিবন্ধি পুত্র। আর এটাই হলো- জিন্নাহ কবিরের অপরাধ।
এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নিকট পাঠানো অভিযোগটি বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও মানহানিকর বলে দাবি করেছেন জেলা বিএনপির নেতাকর্মী এবং এস এ জিন্নাহ কবির।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবিরের বিরুদ্ধে ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলায় দলের চিহ্নিত অপরাধীদের মাধ্যমে চাঁদাবাজী, ভূমিদখল, হাটবাজার, ঘাট দখল, সিএনজি ও বাসষ্ট্যান্ড দখল, বালু মহল দখলসহ নানাবিধ অবৈধ অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য বিএনপির নাম ব্যবহার করে দলের ভাবমূর্তি জনসাধারণের কাছে ক্ষুন্ন করে চলেছেন বলে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়। অথচ পুরো জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা জিন্নাহ কবিরকে একজর জনহিতৈষি রাজনৈতিক নেতা হিসেবে চিনেন।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ঘিওর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান খান কুদরত জনমনে ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে ঘিওর বালুমহল দখল করে ও বরংগাইল-টাঙ্গাইল-নাগরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচলকৃত সিএনজি থেকে চাঁদা আদায় করছে। বানিয়াজুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রাজাকে দিয়ে তরা বালুমহল থেকে বালু উত্তোলন করছেন।
এমনকি এসএ জিন্নাহ কবিরের মেয়ের জামাতা ব্যারিষ্টার জাওয়ানের বিরুদ্ধে বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট, পুখুরিয়ায় স্টোন ব্রিক্সস কারখানা ও স্কয়ার কোম্পানির চলমান কাজে বাধা প্রদান করে অর্থ আদায়সহ মাসিক চাঁদা আদায়ের বানোয়াট অভিযোগ করা হয়।
অথচ ঘিওরের শ্রীধরনগর বালুমহালের ইজারা পায় 'স্কীম এসোসিয়েটস' নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক রাসেল মাহমুদ। ৬৫ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ইজারা পাওয়া বালুমহালটি ইজারার শর্ত মেনে ও রাজস্ব জমা দিয়ে চালানো হয়। রাসেল মাহমুদ নিজেই বালুমহালটি পরিচালনা করছেন বলে জানান।
একইভাবে ২ কোটি ৯ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকায় তরা বালুমহালটি ইজারা পায় মেসার্স মাকসুদ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী মাকসুদ একজন প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত না থাকলেও বিএনপির সমর্থক হিসেবে সমধিক পরিচিত।
ঠিকাদার মাকসুদ বলেন, ইজারার শর্ত মেনে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আমি বালুমহালটি চালাচ্ছি। বালুমহালটি দেখাশোনা করছে আমার ভাতিজা জিসান।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকার পতনের পর পরিবহন সেক্টরের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিরাও পালিয়ে যান। এরপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় চাঁদাবাজির ঘটনা। পরিবহন শ্রমিকদের দাবি, তারা এখন অনেক ভালো আছেন। কারণ কাউকে কোন চাঁদা দিতে হচ্ছে না। শ্রমিকরা জানান, সিরিয়াল ঠিক রাখার জন্য তাদের মধ্য থেকে প্রতিদিন একজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্ব পালনের জন্য সবাই তাকে ১০ টাকা করে দেয়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবির বলেন, একটা চক্র দীর্ঘদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। এটাও ওই চক্রের কাজ। তারা আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এসব মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারী সফিউদ্দিনের পক্ষে এতো কিছু লেখা সম্ভব নয় দাবি করে তিনি বলেন, একজন বিশেষ ব্যক্তি তার বাসার কম্পিউটারে অভিযোগটি লিখে সফিউদ্দিনকে দিয়ে সিগনেচার করিয়েছে।
এই মিথ্যা অভিযোগ ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এস এ জিন্নাহ কবির। একইসাথে এই চক্রের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়াসহ আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।
এসএ জিন্নাহ কবির আরো বলেন, ৫ আগস্টের পরে অনেকে বিএনপি নেতা হয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের কাউকে বিগত ১৬ বছরে আমরা কোথাও দেখিনি। কিন্তু ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে তারাই হঠাৎ বিএনপির নেতাকর্মীদের মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছে। হামলা চালাচ্ছে, দখলবাজি করছে। এরা কখনো নিজেদের ছাত্র সমন্বয়ক ও ছাত্রদলের পরিচয়ে অপকর্ম করছে। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, বিএনপির পদধারী যাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ পেয়েছি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি, বহিষ্কার করেছি। এখন দলের ভিতরে যাদের কোন পদ-পদবী নেই, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা কিভাবে নেবো?
নিউজ রুমঃ [email protected] অথবা [email protected]
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com