খন্দকার রাজু আহমেদ ফুয়াদ
জামালপুর ।
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে নতুন করে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে ।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের অব্যাহত বৃষ্টির কারনে এই ভাঙন বলে মনে করছেন নদী পাড়ের মানুষ । হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর পানি ।
এদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গিয়েছে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানি ইউনিয়নের মন্ডল বাজার সংলগ্ন প্রায় ২০০ মিটার পাকা রাস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে । এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন দশ থেকে পনের হাজার মানুষ যাতায়াত করে । এখন তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে । গত সাত দিন থেকে নদীর পানি বৃদ্ধি ও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে । ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ তাদের বাড়ি ঘর দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে । একমাত্র রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় চিকাজানি ও হরিচন্ডি ইউনিয়নের দশটি গ্রাম দেওয়ানগঞ্জ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে । বিপাকে পড়েছে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ । ভাঙন কবলিত এলাকার মো, জাকিউল ইসলাম জানান গত বছরের বন্যায় তার ঘর বাড়ি ভেঙে যায়, তাই তিনি রাস্তার পাশে ছোট একটি ঘর করে কোন রকম আশ্রয় নিয়েছেন আর এখন সেই রাস্তা নদীতে ভেঙে যাওয়ায় তিনি এখন কোথায় যাবেন সেই ভাবনা তাঁকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে । অটো রিকশা চালক সুজন জানান, রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় আমার একমাত্র আয়ের মাধ্যম অটো রিকশা আটকে গেছে তাই আয় রোজগার বন্ধ এখন আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে । বানভাসি শেফালী বেগম বলেন, প্রতিবছর বন্যায় আমাদের ঘর বাড়ি ভিটে মাটি নদীতে চলে যায় কিন্তু আমাদের দেখার কেউ নেই । আপনারা (সাংবাদিক ) আসেন কাগজে লিখেন তাওতো কোন কাজ হয়না, শুধু ভোটের সময় নেতারা আসে ও নানা রকম প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু ভোট শেষ হলে আর তাদের দেখা পাওয়া যায় না। আমাদের কষ্ট কেউ বোঝেনা।
এ দিকে বন্যা এবং ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে চিকাজানি ও হড়িচন্ডি ইউনিয়নের চর বাহাদুরাবাদ, ফারাজি পাড়া, বড়ই কান্দি, গোলাবাড়ি, মইন্যা বাজার, হাজারিগ্রাম ও নয়া গ্রাম এবং উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে চর ডাকাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দেলোয়ার হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় । স্থানীয়রা মনে করেন এই বিদ্যালয় দুটি ভাঙন থেকে রক্ষা করতে না পারলে চর এলাকার শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙে পড়বে। তাই তারা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন ।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ জানান এই উপজেলা একটি নদী বেষ্টিত এলাকা এখানে প্রতিবছর বন্যা ও নদী ভাঙন লেগেই থাকে । ইতিমধ্যে রাস্তা ভেঙে যাওয়ার কথা আমি জেনেছি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে । নদী শাসন যেহেতু পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন তাই এই ভাঙনের ব্যাপারে আমি ব্যক্তিগত ও লিখিত ভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ড কে অবহিত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলি। এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কে বলা হয়েছে আমাদের প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে । আক্রান্ত এলাকায় জরুরি ত্রাণ বিতরণ চালু করা হবে।
নিউজ রুমঃ [email protected] অথবা [email protected]
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com