এস,এম,শামীম (ফুলপুর) ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ-
ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার রহিমগঞ্জ ইউনিয়নের তিতপুরে গ্রামে পারিবারিক কলহের জেরে হামলা ও মামলার ঘটনার বিষয়টি নিয়ে স্হানীয় ভাবে সমাধানের আশ্বাস দিয়ে কাল ক্ষেপন করছেন রহিমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ একরাম হোসেন চৌধুরীকে রী পান্না।
২৮ জানুয়ারী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় রহিমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদে দুপক্ষের উপস্হিতিতে স্হানীয় ভাবে সালিশের মাধ্যমে সমাধানের কথা থাকলেও ভিন্ন কারণে তা বাতিল করা হয়েছে।
ভূক্তভোগী পরিবারে পক্ষ থেকে ২৭ জানুয়ারী সোমবার রাতে চেয়ারম্যান এর সাথে দেখা করতে গেলে আলাপ চারিতার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, পরানগঞ্জ ইউনিয়নের লোকজন এসে আপনাদেরকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গেলেও সবাই মিলে তাদের কিছুই করতে পারবেন না।
একজন ইউপি চেয়ারম্যানের এমন কথায় হতাশ স্হানীয় জনসাধারণ। বিষয়টি ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত প্রকাশ করছে এমনটাই জানালেন স্হানীয় সচেতন মহলের একটি অংশ। একটি পক্ষকে বিশেষ সুযোগের ব্যবস্হা করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ভূক্তভোগী পরিবারের।
ইউপি চেয়ারম্যান এর এমন উদাসীন আলোচনার ফলে ২৮ জানুয়ারী মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় রহিমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বৈঠকে বসার বিষয়টি বাতিল করা হয়েছে। সেই সাথে আগামী এক সপ্তাহের মাঝে উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে নতুন তারিখ নির্দারণের আশ্বাস দিয়ে কাল ক্ষেপনের সুযোগ নিচ্ছেন রহিমগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান শেখ একরাম হোসেন চৌধুরী পান্না।
একটি সুত্রে জানাজায়, রহিমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ময়মনসিংহে যাতায়াতের একমাত্র নির্ভর যোগ্য বিশ্বস্ত পথ ৪ নং পরানগজ্ঞ ইউনিয়নের অংশ। তাই তিনি তাদের সাথে কোন প্রকার বৈরিতা করতে রাজি নন।
এমন কি তিনি জানান, পরানগঞ্জ ইউনিয়ন ও চরাঞ্চলের মানুষ খুবই উশৃঙ্খল ও ঝগড়াটে প্রকৃতির লোক, তারা এখানে এসে কোন হামলা বা দাঙ্গা সৃষ্টি করলে তা সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। তাই বিষয়টি পরবর্তীতে বিবেচনা করে জানানোর আশ্বাস দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার পারিবারিক কলহের জেরে ফুলপুর উপজেলার ৭নং রহিমগঞ্জ ইউনিয়নের তিতপুর গ্রামে মেয়ে পক্ষের বাড়িতে এসে বাড়ি ঘরে হামলা ও ভাঙ্গচুরের ঘটনায় জড়িত ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ৪নং পরানগঞ্জ ইউনিয়নের পরানগঞ্জ বাজার সংলগ্ন, চর বউলা গ্রামের এক সময় ঘরজামাই হিসেবে উক্ত এলাকায় বসবাসকারী মোঃ দুলাল প্রামাণিক ও তার স্ত্রী বতর্মান স্বামী পরিত্যক্ত মোছাঃ শাহিদা খাতুন (৪২) এর একমাত্র ছেলে সামাদ মিয়া সজীব(২৩) এর নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সহ, মামা রফিকুল ইসলাম (৪৫), হাবি মিয়া (৪০), শফিকুল ইসলাম (৩৮) সহ মোঃ আতাউর রহমান (৩৬) পিতা মৃতঃ- মজিবর রহমান। মোঃ সোরহাব আলী (৩৫) পিতা মৃতঃ- শাহীম উদ্দিন। সর্ব সাং চরবউলা, সদর ময়মনসিংহ। মোঃ সুলমান মিয়া (২৫) পিতা আব্দুল বারের। মোছাঃ সহেদা খাতুন স্বামী আব্দুল বারেক, উভয় সাং তিতপুর, ফুলপুর। এছাড়াও আরও ৪০- ৫০ জনের একটি দলবল পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে হামলার ঘটনা ঘটায়।
নিরীহ পরিবারটির দাবী অন্য ইউনিয়ন থেকে লোকজন এসে আমাদের এলাকায় হামলা চালিয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা তাৎক্ষণিক চেয়ারম্যান কে অবহিত করলে ঘটনা স্হলে চেয়ারম্যান উপস্হিত হন এবং ফুলপুর উপজেলা পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতায় কামনা করলে ওসি মোঃ আব্দুল হাদি, উপজেলা প্রশাসন কর্মকর্তা এর নির্দেশনায় এস আই আজিজুর রহমান পুলিশ টিম নিয়ে দ্রুত ঘটনা স্হলে পৌছান। পুলিশের উপস্হিতি টের পেয়ে হামলা কারীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে সত্যতা যাচাই পূর্বক সকল আলামত সংগ্রহ করা হয়।
ভূক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ আমরা তাৎক্ষণিক আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুষ্ট বিচারের জন্য থানায় অভিযোগ বা মামলা করতে চাইলে, এসআই আজিজুর রহমান আজিজ এর উপস্হিতিতে রহিমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ একরকম হোসেন চৌধুরী (পান্না), উপস্থিত থেকে পরানগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোলায়মান মাস্টারের সাথে কথা বলে মঙ্গলবার সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেন। এসময় এসআই আজিজুর রহমান চেয়ারম্যানের কথামতে বিষয়টি স্হানীয় ভাবে সমাধানের কথা বলে চলে আসেন।
বিষয়টির সম্পর্কে জানতে এই আই আজিজুর রহমান আজিজ এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, যেহেতু হামলার ঘটনার বিষয়টি ৭ নং এর বতর্মান ইউপি চেয়ারম্যান, ৪ নং এর ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছেন এবং সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে তাই আমরা কোন আইনি ব্যবস্হা গ্রহণ করি নাই। বিষয়টি আমি ওসি স্যারকে অবগত করেছি, প্রয়োজনে পরবর্তীতে অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনি ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।
উক্ত ঘটনায় বিষয়টি সম্পর্কে জানতে ওসি মোঃ আব্দুল হাদি, উপজেলা প্রশাসন কর্মকর্তা এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে অবগত স্বরুপ স্বীকার করে বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য যেহেতু দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণ উভয় পক্ষকে আশ্বস্ত করেছেন, সেহেতু বিষয়টি স্হানীয় ভাবে নিরসন হওয়াটাই উত্তম।
অপর দিকে, রহিমগনঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদে উভয় পক্ষের উপস্হিতিতে সালিশ বৈঠককে কেন্দ্র করে, হামলার শিকার দুই ভূক্তভোগী চেয়ারম্যানের দূর্বলতা ও অপরাগতার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করলে, এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা প্রশাসন কর্মকর্তা ওসি আব্দুল হাদি জানান, উক্ত বিষয়টি সমাধানে চেয়ারম্যানগণ ব্যার্থ হলে, এস আই আজিজুর রহমানের সাথে কথা বলার নির্দেশ দেন এবং ওনার মাধ্যমে নিদিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করে উভয় পক্ষকে থানায় ঢেকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন।
নিউজ রুমঃ News.dainikparibarton@gmail.com অথবা News@dainikparibarton.com
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com