এস চৌধুরী, কাপ্তাই, রাঙ্গামাটি।
ধুপ পানি ঝর্ণাটি লোক চক্ষুর অন্তরালে ছিল।২০০০ সালের দিকে জনৈক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী গভীর অরন্যে ধুপ পানি ঝর্ণার নীচে ধ্যান শুরু করেন।পরে স্থানীয় লোক জন মিলে ঐ বৌদ্ধ ধ্যান রত সন্ন্যাসীকে দিনের নির্দিষ্ঠ কিছু কিছু সময় বা উপলক্ষে সেবা করতে গেলে ঐ ঝর্ণাটি জন সম্মুখে পরিচিতি লাভ করে।
সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হলো মানব জাতি।শ্রষ্ঠা সৃষ্টি করেছেন মানব জাতি সৌন্দর্য মন্থন করার জন্য ধুপ পানি ঝর্ণা। বাংলাদেশের পর্যটন নগরী রাঙ্গামাটির বিলাই ছড়ি উপজেলার নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মধ্যে ধুপ পানি ঝর্ণা অন্যতম। এটা ফারুয়া ইউনিয়নের ওড়া ছড়ি নামক স্থানে অবস্থিত। স্থানীয়রা একে ধুপ পানি ঝর্ণা নামে অভিহিত করেছে।
তঞ্চঙ্গ্যা ভাষায় ধুপ শব্দের অর্থ সাদা আর পানি যুক্ত করে এটিকে সাদা পানির ঝর্ণাও বলা হয়।বিলাই ছড়ি ধুপ পানি ঝর্ণা এই মূহুর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর ঝর্ণা গুলোর মধ্যে একটি। সু বিশাল উচ্চতা,শুভ্র জলরাশি ঝর্ণা।ঝর্ণার নীচের গুহার জন্য পর্যটকদের কাছে এই ঝর্ণাটির আকর্ষন সব সময় অন্য রকম। ঝর্ণাটির স্বচ্ছ পানি এবং অনেক উঁচু থেকে আঁচড়ে পড়া জলরাশি দর্শনার্থীদের মূহুর্তের জন্য বিমোহিত করে দিবে।ধুপ পানি ঝর্ণার নীচের গুহায় চোখ বন্ধ করে বসলে মনে হবে অন্য জগতে চলে গিয়েছে।
সমতল থেকে এই ঝর্ণার উচ্চতা প্রায় ১৫০ ফিট।স্থানীয় সূত্রে জানা যায় ঝর্ণা থেকে আঁছড়ে পরা পানির শব্দ প্রায় ২ কিমি দুর থেকেও শুনা যায়।এই ঝর্নার উপরে এক সাধু তার আশ্রমে ধ্যান করতেন।স্থানীয় ভাষায় এই ধর্ম যাজক সাধুকে বলা হতো ভান্তে। তিনি সপ্তাহের ছয় দিন ধ্যান করতেন। ছয়দিন ভান্তে কোন রকম চীৎকার চেচামেচি পছন্দ করতেন না।শুধু রবিবার খাবার খাওয়ার জন্য নীচে নেমে আসতেন।তাই শুধু রবিবার পর্যটকদের জন্য ঝর্ণা দেখার অনুমতি ছিল।তবে বর্তমানে এটি ভ্রমন পিপাসুদের আগ্রহের স্থান হওয়ায় ঝর্নার স্থানে শব্দ না করার শর্তে সপ্তাহের অন্যান্য দিনও প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
বিলাইছড়ি উপজেলা শিল্প কলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক জনাব বিপ্লব বড়ুয়া জানান ধুপ পানি হচ্ছে এক বৌদ্ধ ভিক্ষুর তীর্থ স্থান। কাজেই পর্যটকদের এই স্থানে ভ্রমনে এসে হৈ হুল্লা না করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
চট্টগ্রাম শহর থেকে পর্যটকরা ২ ঘন্টায় কাপ্তাই জেটি ঘাট পৌঁছাতে পারবেন। জেটি ঘাট থেকে ২ ঘন্টায় বিলাই ছড়ি। পথে আর্মি চেকপোস্ট পড়বে।আইডি কার্ডের ফটোকপি জমা দিয়ে অনুমতি নিতে হবে।কাপ্তাই থেকে বিলাই ছড়ি নদী পথে যাওয়ার সময় বাড়তি বোনাস হিসাবে পাওয়া যায় নীলাভ কাপ্তাই লেক্ আর সূর্স্ত অস্ত যাওয়ার দৃশ্য যা মূহুর্তের জন্য নিজেকে বিমোহিত করে ফেলবে।
বিলাইছড়ি তে রেস্ট হউজ রয়েছে।তার মধ্যে অন্যতম নিলাদ্রী রিসোর্ট।এই রিসোর্টের প্রতিষ্ঠাতা জনাব পারভেজ চৌধুরী (ইউ এন ও)জানান প্রতি রুম, পার নাইট ভাড়া ২০০০/=,তিনি আরও জানান নিলাদ্রী রিসোর্ট থেকে উপভোগ করা যায় নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক পরিবেষ্টিত অপরুপ সৌন্দর্য যেখান থেকে মানুষ হারিয়ে যায় মেঘের রাজ্যে।তিনি জানান হাজার হাজার পর্যটক নীলাদ্রি তে ভ্রমন করেছে।কিন্তু মহামারী কোভিড ১৯ এর কারনে বর্তমানে রিসোর্টের কর্মকান্ড বন্ধ রয়েছে।
বিলাইছড়ি উপজেলা ক্রীড়া সম্পাদক জনাব সুদর্শন বড়ুয়া জানান নিলাদ্রী রিসোর্টের নিকটেই রয়েছে ক্যাফে যেখান থেকে পরিবেশন করা হয় সুস্বাদু খাবার। অতীতে তাদের আতীতেয়তায় মুগ্ধ হয়েছেন অনেকেই।
সিলেট টু চট্টগ্রাম ট্রেনে ৭৫০×২=১৫০০/=(আসা যাওয়া)
রেল স্টেশন টু বহদ্দারহাট ২০/=
বহদ্দার হাট টু কাপ্তাই বাসে ৮০/=
কাপ্তাই টু বিলাই ছড়ি বোটে (১০০×২)=২০০/=
বিলাইছড়ি তে গাইড পাওয়া যায়।
ধুপ পানি ঝর্ণা গাইড খরচ ৫০০/=
মুপ্পোছড়া ও নকাটা ঝর্ণার জন্য গাইড খরচ ৫০০/=
মুপ্পোছড়া ঘাটে বোট পার্কিং ১০০/=
বিলাইছড়ি থেকে এক ঘন্টায় যাওয়া যায় ন কাটা ঝর্ণা,সেখান থেকে যেতে হয় মুপ্পোছড়া ঝর্ণা।উল্লেখ্য যে এই স্থানে টেলিটক ও রবি সিম ব্যাতীত অন্য কোন অপারেটরে নেট ওয়ার্ক থাকে না।
করোনা কালীন সময়ে পর্যটকদের আনাগোনা না থাকায় এলাকার রেস্টুরেন্ট ও রিসোর্ট গুলোকে আর্থিক ক্ষতি গুনতে হচ্ছে।
নিউজ রুমঃ [email protected] অথবা [email protected]
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com