বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি জনবহুল দেশ যেখানে প্রতিনিয়ত ধর্ষণের মতো নৈতিকতা বিবর্জিত কর্মকান্ড প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। ছোট্ট শিশু থেকে বয়স্কা বৃদ্ধা পর্যন্ত কেউই ধর্ষকের নোংরা থাবা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। ধর্ষক শুধু ধর্ষণ করেই ক্ষ্যান্ত হচ্ছে না বরং ধর্ষিতাকে হত্যাও করছে। শুধু যে নারী ও শিশু ধর্ষণ হচ্ছে তা নয়, বালক শিশুও বলাৎকারের শিকার হচ্ছে কতিপয় কুরুচিপূর্ণ অসৎ মানুষ নামের নরপশু দ্বারা।
খবরের কাগজ খুললেই আমাদের আঁতকে উঠতে হয় ধর্ষণের কাহিনি পড়ে। যখন ধর্ষক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে তখন ধর্ষক রাজনৈতিক ক্ষমতা বলে কিংবা আইনের সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যায়। বাংলাদেশের ধর্ষণের পরিসংখ্যান ঘাটলে শেষ করা যাবে না। এটি যেন নিত্যদিনের এক ব্যাধি হয়ে উঠেছে। ১৯৯৮ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জসীমউদ্দিন মানিক ধর্ষণে সেঞ্চুরি করেন। ২০১৮ সালে বরিশালের বানারিপাড়ায় মা মেয়েকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর তাদের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান নামের একজন ব্যক্তি। কুমিলস্না ক্যান্টনমেন্টের সংরক্ষিত এলাকায় তনু ধর্ষিত হয়। কে বা কার দ্বারা ধর্ষণ হয় সেটা গোয়েন্দা বাহিনী প্রকাশ করেনি। ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ তারিখে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে
প্রকাশ্য দিনের আলোয় যুবতী মেয়ের সামনে তার মাকে ধর্ষণ করেন রুহুল আমিন নামের এক অসৎ ব্যক্তি। ঢাকার এক আবাসিক এলাকায় সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে ছাঁদ থেকে ফেলে দেয় এক নরপিশাচ। তিন বছরের শিশুর যৌনাঙ্গ কেটে ধর্ষণ করে এক লম্পট। এরকম হাজার হাজার ধর্ষণ হচ্ছে আমাদের চারপাশে কিন্তু ধর্ষণের সঠিক বিচার হচ্ছে না। কারো ফাঁসি হচ্ছে না। ধর্ষক সমাজে অবলীলায় ঘুরে বেড়াচ্ছে আর ধর্ষিতা বেঁচে নিচ্ছে আত্মহত্যার পথ। পৃথিবীটা চলে যাচ্ছে অসৎ ব্যক্তিদের হাতে। পৃথিবীর উন্নত দেশ যেমন যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণের শাস্তি ধর্ষিতার বয়স এবং ধর্ষণের মাত্রা বিবেচনা করে সর্বোচ্চ ৩০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড। আয়তনে বিশ্বের বড় দেশ রাশিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি সর্বোচ্চ ২০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড। জনসংখ্যায় বিশ্বের বড়দেশ চীনে ধর্ষণের শাস্তি মেডিকেল পরীক্ষার পর ধর্ষণ প্রমাণিত হলে সরাসরি মৃতু্যদন্ড। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে ধর্ষণের শাস্তি শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে জনসমক্ষে শিরশ্ছেদ করা। আর মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশসহ আরব বিশ্বের দেশে ধর্ষণের শাস্তি পাথর ছুড়ে মৃতু্যদন্ড, ফাঁসি, হাত-পা কাটা, ধর্ষকের যৌনাঙ্গ কেটে মৃতু্য কার্যকর, বিষাক্ত ইনজেকশন পুষ করে মারা। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকায় ধর্ষণের শাস্তি ২০ বছরের কারাদন্ড।
মঙ্গোলিয়ায় ধর্ষককে ধর্ষিতার পরিবারের হাতে তুলে দিয়ে মৃতু্যদন্ড কার্যকর করা হয়। মালেশিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি মৃতু্যদন্ড এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশ আফগানিস্তানে ধর্ষণের শাস্তি ৪ দিনের মধ্যে ধর্ষককে গুলি করে হত্যা করা। যেসব দেশে ধর্ষণের শাস্তি মৃতু্যদন্ড সেসব দেশে ধর্ষণের পরিমাণ অনেকাংশে কমে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশে ধর্ষণের শাস্তি নির্দিষ্ট নয়। আইনের মারপঁ্যাচে সবাই আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পায়- যা কোনোভাবে কারোরই কাম্য নয়। সরকার ধর্ষণের পরিমাণ কমাতে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃতু্যদন্ডের বিধান কার্যকর করতে পারে। নতুবা মাদক ও চোরাচালান রোধের মতো 'চলো যাই যুদ্ধে', ধর্ষকের বিরুদ্ধে ' স্স্নোগানকে ধারণ করে ধর্ষককে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধে মারতে পারে।' ধর্ষণের মতো নীতিবিবর্জিত কাজ কারোরই কাম্য নয়। তাই আসুন, সময় থাকতে ধর্ষকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি এবং ধর্ষণের শাস্তি মৃতু্যদন্ড চাই।
নিউজ রুমঃ [email protected] অথবা [email protected]
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com