আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ থাইল্যান্ডের ভোটাররা নির্বাচনে এমন একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে রায় দিয়েছেন, যারা দেশটির প্রতিষ্ঠানগুলোতে বৈপ্লবিক সংস্কারের ডাক দিচ্ছে। এই নির্বাচনে থাই পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের পাঁচশ আসনের মধ্যে ১৫১টি আসনে জয়লাভ করেছে মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি।
যদিও নির্বাচনের আগে জনমত জরিপে এগিয়ে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন চিনাওয়াতের কন্যার নেতৃত্বাধীন ফিউ থাই পার্টি। কিন্তু মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি তাদের চেয়েও এগিয়ে।
বিশ্লেষকরা এই নির্বাচনের ফলকে এক রাজনৈতিক ভূমিকম্প বলে বর্ণনা করছেন। কারণ এটি থাই জনমতে এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁক বদলের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
একইসঙ্গে এই নির্বাচনী ফলকে থাইল্যান্ডের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং তাদের সেনা-সমর্থিত রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রত্যাখ্যানের সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। সরকারি জোট মাত্র ১৫ শতাংশ আসন জিতেছে।
বিজয়ী দল মুভ ফরোয়ার্ডের নেতা পিটা লিমজারাট বিবিসিকে বলেছেন, আমরা কোনো চেষ্টা বাদ রাখিনি। গত এক দশকে জনগণ অনেক ভুগেছে। এখন এক নতুন দিন শুরু হচ্ছে।
নির্বাচনে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ফিউ থাই। দলটি জানিয়েছে, তারা মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি এবং আরও চারটি ছোট দলের সঙ্গে কোয়ালিশনে যোগ দিতে রাজি হয়েছে। এর ফলে নতুন পার্লামেন্টে এই জোটের আসন সংখ্যা দাঁড়াবে ৬০ শতাংশের বেশি।
কিন্তু তারপরও ২৫০ আসনের অনির্বাচিত সিনেটকে ভোটে হারাতে এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা যথেষ্ট হবে না। সিনেটের সদস্যদের নিয়োগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান-ওচা। এরা পরবর্তী সরকারের আমলেও পার্লামেন্টে যোগ দিতে পারবে। মুভ ফরোয়ার্ড যে প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে বিজয়ী হয়েছে, সিনেটের সদস্যরা তার বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতে পারে। বিশেষ করে রাজতন্ত্রের অবমাননা সম্পর্কিত আইন সংশোধনের যে বিতর্কিত প্রস্তাব রয়েছে।
পরিবর্তনের হাওয়া
থাইল্যান্ডের থামাসাট বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রাজাক কোনকিরাটি বলেন, “সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারদের রায় দেখে বোঝা যায় তারা প্রায়ুত চান-ওচার শাসনামল থেকে মুক্তি চায়। এই রায়ে বোঝা যায়, মানুষ মুভ ফরোয়ার্ড যে পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছে তাতে বিশ্বাস করে।
থাই সোশ্যাল মিডিয়া এখন ভেসে যাচ্ছে মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির সমর্থকদের উচ্ছ্বাসপূর্ণ বার্তায়। এরা নিজেদের বর্ণনা করতো অর্গানিক ক্যানভাসার বলে। তারা দলের বিজয়কে ‘পরিবর্তনের হাওয়া’ এবং ‘এক নতুন যুগের ভোর’ বলে বর্ণনা করছে।
পিটা টুইট করে বলেছেন, তিনি থাইল্যান্ডের ৩০তম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, আমরা সবাই একই স্বপ্ন দেখি, একই আশা পোষণ করি। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের প্রিয় দেশকে অনেক ভালো করা সম্ভব। আমরা সবাই যদি একসঙ্গে কাজ করি, পরিবর্তন আনা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, এই নির্বাচন প্রমাণ করেছে, যদিও মাত্র চার বছর পেরিয়েছে, কিন্তু মানুষের চিন্তাভাবনায় বিরাট পরিবর্তন এসেছে। গণতন্ত্রপন্থীদের মধ্যে এবং বিদ্যমান ক্ষমতা-কাঠামোর মধ্যে। গণতন্ত্রকে স্বয়ংসিদ্ধ বলে ধরে নেওয়া ঠিক হবে না।
এমএইচএস
নিউজ রুমঃ [email protected] অথবা [email protected]
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com