(জামান মৃধা, নীলফামারী প্রতিনিধি)
নীলফামারী, ডিমলা উপজেলায় তিস্তা নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব দোহল পাড়া ২নং ওয়ার্ডের বসতবাড়ি, কৃষি জমির ফসল, বিভিন্ন স্থাপনা, তিস্তা নদীর বন্যা হতে রক্ষার জন্য ইতিপূর্বে গ্রাম রক্ষা বেড়িবাঁধটি নির্মাণ করেছিলেন সিডিএমপি প্রকল্প হতে খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ। সেই তিস্তা নদীর গ্রামরক্ষা বেড়িবাঁধটি ৬০-৭০ মিঃ সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। এবং বাঁধটির ১৫০মিঃ ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম তাই, দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গ্রামরক্ষা বেড়িবাঁধটি সংস্কার ওই অংশে পুননির্মাণ অথবা ভাঙ্গনরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে যেকোনো সময় ভেঙ্গে যেতে পারে গ্রামরক্ষা বেড়িবাঁধটি। ফলে এই মুহূর্তে তিস্তা নদীতে '''সামান্য বন্যা''' হলেই উক্ত এলাকার প্রায় ৬০০থেকে ৭০০পরিবার ও ৫০০থেকে ৬০০একর ফসলি জমি, ঘর-বাড়ি বিভিন্ন স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীনের শঙ্কায় ভুগছেন তিস্তা নদী পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দারা। এছাড়া (২৯শে জুন-২১) মঙ্গলবার সকালে ভাঙ্গন কবলিত এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে তিস্তা নদীর পাড়ে।
সরেজমিনে এলাকাবাসী ও খগা খড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম (লিথন) জানান, এক সপ্তাহ আগে উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই গ্রামরক্ষা বেড়িবাঁধটিতে ভাঙ্গন শুরু হয়। দুই/এক দিন পর পানি কিছুটা কমতে থাকার সাথে সাথে বাঁধে ভাঙ্গনের তীব্রতা আরও বাড়তে থাকে। প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রামরক্ষা বেড়িবাঁধটি সংস্কার ও সিসি ব্লোক ডাম্পিং, জিও ব্যাগ ফেলা কার্যক্রম শুরু না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যেকোনো মুহূর্তে।
ওই এলাকার মৃত আব্দুল সাত্তার এর ছেলে জামাল উদ্দিন (৭৫), মৃত শুকুর আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪৫), মৃত কোরবান আলীর মেয়ে সুফিয়া বেগম (৫০), সাইফুল ইসলামের ছেলে আবু তালেব (৪৮) সহ অনেকেই অভিযোগ করেন, ভাঙ্গনের প্রাই এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ তো দুরের কথা সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেউ এক নজর দেখতেও আসেনি ভাঙ্গন কবলিত এলাকা। বেড়িবাঁধের আবু তালেবের বাড়ির পাশে ঢলের স্রোত নিচ দিয়ে বিশাল আকারের গর্ত তৈরী করেছে। আর উপর থেকে বিশাল আকৃতির মাটির চাকা দপ দপ করে নদীতে ঢলে পড়ছে। তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে আশপাশের বসতিদের শঙ্কা আর উৎকণ্ঠায় সময় পার করছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বেড়িবাঁধ রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন ও উর্দ্ধতন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম (লিথন) নিজ উদ্যোগে বাঁশ ও বালির বস্তা গ্রামরক্ষা বেড়িবাঁধের পাশে জমাট করে রেখেছেন দুর্যোগকালীন সময়ে ব্যবহার করার জন্য। স্থানীয়দেরকে সাথে নিয়ে প্রাথমিক বেড়িবাঁধ রক্ষায় তিনি কাজ করছেন বলেও জানা যায়। ওই গ্রামরক্ষা বেড়িবাঁধটি ভেঙে গেলে অনেক অসহায় পরিবার ভিটে বাড়ী হারানোর চরম শঙ্কায় ভুগছেন প্রতিনিয়ত।
খগাখরিবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম (লিথন) জানান, তিস্তা নদীতে বন্যার পানি আসলেই খগাখরিবাড়ী ইউনিয়নের দোহল পাড়া গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা তিস্তার বন্যায় প্লাবিত হয় ও নদী ভাঙনের কবলে পড়ে। এই মুহূর্তে কয়েকশো পরিবার এবং কয়েকশো একর আবাদি কৃষি জমি, ঘর-বাড়ি চরম ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে। যেকোন সময় তিস্তা নদীতে এসব ঘর-বাড়ী,আবাদি জমি বিলীন হয়ে যেতে পারে। আমি উপজেলা প্রশাসনকে এ বিষয়টি অবহিত করেছি।
ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জয়শ্রী রানী রায়। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, মেজবাহুর রহমান ও উপসহকারী প্রকৌশলী, ফেরদৌস আলম গ্রামরক্ষা বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ভাঙ্গন কবলিত অত্র এলাকার সর্বসাধারণের জোর দাবী দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রামরক্ষা বেড়িবাঁধটি সংস্কার ও মেরামত পূর্বক আশু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন যথাযথ কর্তৃপক্ষ।
নিউজ রুমঃ [email protected] অথবা [email protected]
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com