মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০২ অপরাহ্ন
মনসুর আহাম্মেদ ঠাকুরগাঁওজেলা প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে বানিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে তৈলবীজ ফসল সরিষা। গ্রাম এমনকি শহর সর্বত্রই সরিষার তেলে রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। সে কারনে প্রতি বছরই ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা অতি আগ্রহে সরিষার চাষ করেন। চলতি বছরও উপজেলার প্রতিটি গ্রামের মাঠের পর মাঠ এখন সরিষার ফুলের সুগন্ধে ভরে উঠেছে। ফুল থেকে মধু সংগ্রহে মৌমাছি নিরালস ভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে। মৌমাছির মৌ মৌ শব্দে এক অপরুপ সৌন্দর্য বিরাজ করছে গ্রামের মাঠের পর মাঠ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলাতে ২ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। অল্প সময়, স্বল্প ব্যয় আর লাভ বেশি সে কারনে উপজেলার সব ধরনের কৃষকের কাছে সরিষার চাষ বেশ জনপ্রিয়। গত কয়েক বছর ধরে সরিষার চাষ করে একই জমিতে ইরি বোরো ধানের চাষ হচ্ছে। এরজন্য কৃষককে খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয়না। ফলে সরিষার চাষ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান কৃষকরা।
উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মরিচ পাড়া গ্রামের মাঠে যেয়ে দেখা যায়, বিঘার পর বিঘা জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। প্রতিটি সরিষার ক্ষেত এখন ফুলে ফুলে ভরা। ফুটান্ত ফুল হতে মধু সংগ্রহে পরিশ্রম করে যাচ্ছে মৌমাছি। মৌমাছির গুনগুন শব্দে মাঠে অন্যরকম এক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সরিষা ক্ষেত পরিচর্জা করতে আসা স্থানীয় কৃষক গোলাম মোস্তফা জানান, চলতি বছরে তিনি আড়াই বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। বর্তমান যে আবহাওয়া বিরাজ করছে তা সরিষার জন্য অত্যান্ত উপযোগী। গাছে ফল আসা থেকে শুরু করে পাকা পর্যন্ত যদি কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হয় তাহলে বাম্পার ফলনের আসা করছেন ওই কৃষক। ঠাকুরগাঁও জেলা গ্রামের চাষিরা মুলত দেশী জাতের সরিষা চাষে অভ্যাস্ত। এ বছরও তার কোন ব্যতিক্রম ঘটেনি। দেশী বিভিন্ন জাতের সরিষা চাষ বেশি হয়েছে বলে ওই কৃষক জানান।
সরিষার বীজে গড়ে প্রায় ৪০ থেকে ৪৪ ভাগ তেল থাকে। ১০ কেজি সরিষা মাড়াই করলে প্রায় ৩ কেজি তেল হয়। সরিষার তেল পুষ্টিগুনে ভরা, যার কারনে দিন দিন এর চাহিদা ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরিষার কোন কিছুই অপ্রয়োজনীয় নই উল্লেখ করে কৃষকরা জানান, বীজ বপনের পর চারা বের হলে সবুজে সবুজে ভরে যায় ক্ষেত। ওই সময় সরিষা গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করে সবজি হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায়। গাছে ফুল আসার পর ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছি।
সরিষা পাকার পর মাড়াই করে সরিষার দানা বের করা হয়। দানা বের হলে কান্ড জালানি হিসেবে ব্যবহুত হয়। সরিষার তেল ভৈজ্যতেল হিসেবে গ্রাম বা শহর প্রতিটি মানুষের কাছেই জনপ্রিয়। সরিষার খৈল গবাদি পশু গরু, মহিষ, ছাগলের জন্য খুবই পুষ্টিকর খাদ্য। খৈল গবাদি পশুর খাদ্যের পাশপাশি মাছের খাদ্য এমনকি জমির জন্য জৈব সার তৈরী করা সম্ভব। তাই দেশব্যাপী সরিষার চাষ আরও বৃদ্ধি কল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা জরুরী বলে অনেকে মনে করেন।
উপজেলা কৃষি সুত্রে বলেন, ঠাকুরগাঁও নিন্ম অ ল ব্যাতীত প্রতিটি এলাকায় সরিষা চাষের জন্য উপযোগী। খরচ কম লাভ বেশি সেকারনে এ জনপদের কৃষক সরিষা চাষে বেশ ঝুকে পড়েছেন। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর সরিষা চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। মুলত দেশী বারী-১৪,১৫,১৬ ও ১৭ জাতের সরিষার চাষ বেশি হয়েছে বলে তিনি জানান
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।