সাস্থ্য ডেস্কঃ ক্লেনজিং, টোনিং এবং ময়শ্চারাইজিং এই ৩টি ধাপ সবার জন্য হলেও, একেক বয়সের স্কিন কেয়ার কিন্তু এক এক রকমের হয় যেমন, টিনেজ। এই সময়টা সবার কাছে অনেক মধুর হলেও, টিনেজারদের কিন্তু পড়াশোনা, সোশ্যাল লাইফ, ক্যারিয়ার, হরমোনাল প্রবলেম ইত্যাদি ছাড়াও অনেক কিছু বজায় রাখতে হয়। তার উপরে রয়েছে ত্বকের যত্ন। বেশীরভাগ টিনেজাররা কনফিউশনে ভোগেন যে, কোনটা তাদের স্কিনের জন্য করা উচিত, আর কোনটা উচিত নয়। একনি (অপহব), ব্রেক আউটস (ইৎবধশ ড়ঁঃ), অয়েলি স্কিন এইগুলো থাকে তাদের কমপ্লেইন লিস্ট এর শুরুতেই। তাই বলা যায়, এই সময়টা তাদের জন্য কিছুটা স্ট্রেসফুলও হয়ে থাকে এছাড়া ভুলভাল ভাবে ত্বকের যত্ন নিতে গেলে উলটো স্কিনেরই বারোটা বেজে যেতে পারে। তাই, টিনেজাররা সঠিকভাবে কিভাবে তাদের ত্বকের যত্ন নিবেন, তা জানাটা খুবই জরুরি। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই, টিনেজারদের ত্বকের যত্ন সম্পর্কে।
\হ
টিনেজারদের ত্বকের যত্ন করার পদ্ধতি :
\হ
টিনেজারদের ত্বকের ধরন বোঝা
প্রথমেই যে বিষয়টির উপর গুরুত্ব দিতে হবে, তা হচ্ছে স্কিনটিকে বোঝা। আপনার স্কিনের টাইপ কি? নরমাল, ড্রাই, অয়েলি নাকি কম্বিনেশন? এটা জানতে, সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে একটা টেস্ট করতে পারেন। ঘুম থেকে উঠে মুখের স্কিনে হাত বুলিয়ে দেখুন। যদি, আপনার স্কিন সফট ফিল হয়, তেমন ব্লেমিশ বা প্যাচ না থাকে এবং স্কিনে অয়েল ব্যালেন্সড থাকে, তবে আপনার নরমাল স্কিন। নরমাল স্কিনের অধিকারীরা নন-অ্যালকোহল মাইল্ড ক্লেনজার ব্যবহার করবেন।
আর যদি ত্বকে স্মুদ ফিল না হয়, ড্রাই প্যাচ, ডাল ফিল হয়। তবে আপনার স্কিন টাইপ ড্রাই। স্কিন ড্রাই হলেও মাইল্ড ক্লেনজার ব্যবহার করবেন। স্কিনে অতিরিক্ত স্ক্রাবিং করবেন না এবং গরম পানিতে গোসল কম করবেন।
যদি স্কিনটি তৈলাক্ত ফিল হয়, পিম্পল, ব্রেক আউটস, পোরস ইত্যাদি থাকে, তবে আপনার স্কিন টাইপ অয়েলি। অয়েলি স্কিন হলে, দিনে ৩ বার মুখটা ফেইসওয়াস দিয়ে পরিষ্কার করবেন।
আপনার স্কিনের টি-জোনে যদি অয়েলি ফিল হয় এবং ফেইসের অন্য অংশগুলো ড্রাই ফিল হয়, তবে আপনার কম্বিনেশন স্কিন। কম্বিনেশন স্কিন হলে, অয়েলি স্কিনের জন্যে তৈরি ক্লিনজার গুলোই ব্যবহার করতে পারেন।
ক্লিনজিং
ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ত্বক ক্লিন করা খুবই জরুরি। নয়তো, ত্বকে জমে থাকা অয়েল, ঘাম, ময়লা কিন্তু স্কিনের ক্ষতিই করবে। সবসময় ভালো মানের ক্লেনজার ব্যবহার করবেন এবং ফেস জোরে জোরে ঘষা থেকে বিরত থাকবেন।
ময়েশ্চারাইজ
সব ধরনের ত্বকেই ময়েশ্চারাইজার কিন্তু মাস্ট। হোক সেটা অয়েলি বা খুব বেশি প্রবলেমেটিক স্কিন। সবসময় স্কিন টাইপ এবং প্রবলেমকে মাথায় রেখে লাইট ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন এবং যেন তা আপনার ত্বকে স্যুট করে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
এক্সফোলিয়েট
টিনেজারদের ত্বক বস্নক হয়ে যাওয়া থেকে রোধ করতে এক্সফোলিয়েটিং করা খুবই ইম্পরট্যান্ট। এজন্য, সপ্তাহে ২/১ বার ত্বকে স্ক্রাব ব্যবহার করবেন। তবে, দোকান থেকে কেনা স্ক্রাবার ব্যবহার না করে, হোমমেইড স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন। যেমন, চালের গুড়ো বা ওটস এর গুড়ো এবং মধু মিলিয়ে স্ক্রাব বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। তবে, সবসময় খুব ধিরে ধিরে স্কিন স্ক্রাব করবেন।
ফেস মাস্ক
যদি সপ্তাহে একদিন ফেইস মাস্ক ব্যবহার করেন, তবে আপনার স্কিন অবশ্যই আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে। তবেই বোঝে নিন, মাস্ক ব্যবহার কতটা ভালো স্কিনের জন্য। মাস্ক শুধু স্কিন থেকে ময়লা, টক্সিনস (ঞড়ীরহ), ইমপিউরিটিস (ওসঢ়ঁৎরঃরবং) দূরই করে না, বরং আপনার স্কিনকে ময়েশ্চারাইজডও (গড়রংঃঁৎরুবফ) রাখে। দোকানের কেনা মাস্কগুলো চাইলে ব্যবহার করতে পারেন। তবে, বাড়িতে বানানো ন্যাচারাল ইনগ্রিডিয়েন্টসের (ওহমৎবফরবহঃ) মাস্কগুলো টিন স্কিনের জন্য বেশি ভালো হবে। তাই, বেসন এবং হলুদ, মধু এবং লেবু, টমেটো এবং মুলতানি মাটি, চন্দন এবং মধু ইত্যাদি ইনগ্রিডিয়েন্টস মিলিয়ে মাস্ক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
পাউডারের ব্যবহার
অয়েলি স্কিনের অধিকারী টিনেজাররা এই ভুলটি করেন। তারা ত্বকের অয়েলি শাইন দূর করতে পাউডার অ্যাপ্লাই করে থাকেন। এটা তো হেল্প করেই না উলটো আপনার পোরস ক্লগ করে দেয় অথবা লোমকূপগুলো বন্ধ করে দেয়। তাই পাউডার ব্যবহার না করে টিস্যু বা ব্লটিংপেপার (ইষড়ঃঃরহম ঢ়ধঢ়বৎ) ব্যবহার করুন।
মেকআপ
টিনেজাররা মেকআপ পছন্দ করলেও সেক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখবেন। টিন স্কিনে ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করাই ভালো। এর বদলে টিনটেড ময়শ্চারাইজার (ঞরহঃবফ সড়রংঃঁৎরুবৎ) ব্যবহার করুন। মেকআপ ব্রাশ এবং স্পঞ্জ সবসময় ক্লিন রাখুন।
ফেসে বারবার হাত দেবেন না
আপনি কি জানেন, বারবার ফেইসে হাত দেওয়ার ফলে হাতে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলো ফেইসে চলে যায়? তাই বারবার ফেইসে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকুন। সবসময় ফেইস টাওয়াল, মেকআপ ব্রাশ ক্লিন রাখবেন। মেকআপ প্রোডাক্ট এবং ব্রাশ অন্য কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
পিম্পল বা ব্রণ খোঁটাখুঁটি করবেন না
আমি জানি পিম্পল হলে, সেটা গেলে দেয়া থেকে অনেকেই বিরত থাকতে পারেন না। কারণ, এটা অনেক তৃপ্তিদায়কও বটে। আমিও একটা সময় পিম্পল গেলে দিতাম। যার ফলাফল, স্কিনে দাগ বসে গেলো। তাই, পিম্পল খোঁটাখুঁটি থেকে বিরত থাকুন। পিম্পলের উপরে সামান্য টি ট্রি অয়েল লাগিয়ে রাতে ঘুমাতে যান।
ডক্টরের পরামর্শ নিন
স্কিনের প্রবলেম যেমন, পিম্পল, ব্রেক আউট, র?্যাশ ইত্যাদি হলে কারও থেকে শুনে বা নিজে নিজে কিছু একটা কিনে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। স্কিন ডক্টরের সঙ্গে কথা বলুন, সমস্যাগুলো জানান এবং পরামর্শ নিন। কারণ, এই সময়ে হরমোনাল সমস্যাগুলো দেখা যায় অনেক বেশি। তাই, ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে কিছু করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। টিনেজারদের ত্বকের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই এই দিকগুলি লক্ষ্য রাখতে হবে।
সানবস্নক
টিনেজারদের ত্বকের যত্নে সানবস্নক ব্যবহার। হেলদি এবং ট্যান ফ্রি স্কিন পেতে প্রতিদিন সানবস্নক বা সানস্ক্রিন ব্যবহার করতেই হবে। বাইরে যাওয়ার ২০ মিনিট আগে সানবস্নক ব্যবহার করবেন। সানব্লকটিতে যেন কমপক্ষে এস পি এফ ৩০ থাকে।
আপনি যেহেতু টিনেজার, আপনার ত্বকও কিন্তু ইয়ং। তাই টিনেজারদের ত্বকের যত্ন নিতে ভারী কিছু না মেইনটেইন করে সবসময় সিম্পল একটি স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো করুন। এর সঙ্গে ব্যালেন্সড ডায়েট (ইধষধহপবফ ফরবঃ) এবং প্রচুর পানি খেতে ভুলবেন না। কারণ, সৌন্দর্য ভেতর থেকে আসাটাই কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। ভালো থাকুন
নিউজ রুমঃ [email protected] অথবা [email protected]
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com