আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ গণনায় ভুল হয়েছিল বলে স্বীকার করে নিয়েছে চীনের উহান প্রদেশের প্রশাসন। তারা জানিয়েছে, কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণে চীনের উহানে যত জনের মৃতু্য হয়েছে বলে সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়েছিল, প্রকৃত সংখ্যাটা তার চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি। ফলে, করোনা সংক্রমণে উহানে মৃতের সংখ্যা বাড়ল আরও এক হাজার ২৯০। মোট তিন হাজার ৮৬৯। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে উহান প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণনায় ভুল স্বীকার করে ওই প্রদেশে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা জানানো হয়েছে। সংবাদসূত্র :বিবিসি, রয়টার্স, এবিপি নিউজ বেইজিংয়ের সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, উহানের বাজার থেকেই কোভিড-১৯ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, নাকি অন্য কোনো ভাবে, তা নিয়ে গোড়া থেকেই সংশয় প্রকাশ করেছে পশ্চিমা দুনিয়া। উহানে মৃতের সংখ্যা নিয়ে সরকারি বিবৃতিও মেনে নিতে পারেনি অনেক দেশ। অভিযোগ ছিল, করোনা সংক্রমণে উহানে আরও বহু মানুষের মৃতু্য হয়েছে। কিন্তু সেই সংখ্যাটা গোপন করা হচ্ছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীন নতুন ধরনের নিউমোনিয়ার সংক্রমণের কথা প্রকাশ করে। পরে সেই নিউমোনিয়ার কারণ হিসেবে নতুন এই করোনাভাইরাসকে শনাক্ত করা হয়, যাকে বলা হচ্ছে নভেল করোনাভাইরাস। আর এ ভাইরাসের সংক্রমণে যে রোগ হয়, তাকে বলা হচ্ছে কোভিড-১৯। চীন প্রথম এ ভাইরাসে কারও মৃতু্যর কথা জানায় ১১ জানুয়ারি। কিন্তু ততদিনে এত দ্রম্নত এ ভাইরাস ছড়াতে শুরু করে যে, জানুয়ারির শেষ দিকে উহানসহ হুবেই প্রদেশের বড় একটি এলাকা লকডাউন করে ফেলা হয়। নানা কঠোর পদক্ষেপের ফলে মার্চের শুরু থেকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে চীনের পরিস্থিতি। কিন্তু ততদিনে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে ভাইরাসের বিস্তার ব্যাপক মাত্রা পেতে শুরু করেছে। ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাব অনুযায়ী, নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর গত সাড়ে তিন মাসে বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে ২১ লাখ ৯৩ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, আর মৃতু্য হয়েছে এক লাখ ৪৭ হাজারের বেশি মানুষের। আক্রান্ত এবং মৃতু্য- দুদিক দিয়েই যুক্তরাষ্ট্র এখন শীর্ষে। সেখানে প্রায় ছয় লাখ ৮০ হাজার মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, আর মৃতু্য হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের। আর চীন এ পর্যন্ত ৮৩ হাজার আক্রান্তের তথ্য দিয়েছে, সেই সঙ্গে চার হাজার ৬৩৬ জনের মৃতু্যর কথা জানিয়েছে। চীনে আক্রান্ত ও মৃতু্যর সংখ্যা অন্য দেশের তুলনায় এত কম হওয়ায় সন্দেহ আর অবিশ্বাস ছিল পশ্চিমা দেশগুলোর। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। চীনের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ এ মৃতদের সৎকার করতে বিশাল ফাঁকা জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছিল দেশটির সরকার। সেখানে ফেব্রম্নয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন শত শত মানুষকে রাখা হয়েছে; অথচ বলা হয়েছে অনেক কম। 'ওয়াশিংটন পোস্টের' এক প্রতিবেদনে বলা হয়, উহানের হানকাউ ক্রিমেশন সেন্টারে প্রতিদিন ১৯ ঘণ্টা ধরে মৃতদেহ পোড়ানো হয়েছে। তাতে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ১২ দিনে কেবল উহানেই ৪০ হাজারের বেশি মানুষের মৃতু্য হয়ে থাকতে পারে বলে ওই প্রতিবেদনে ধারণা দেওয়া হয়।
নিউজ রুমঃ [email protected] অথবা [email protected]
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com