শেখ সফিকুল ইসলাম সফিক বানিয়াচং হবিগঞ্জ প্রতিনিধি -
নেই আগের মত দুর্গন্ধ ও স্যাতস্যাতে ময়লার দৃশ্য। পরিচ্ছন্ন কর্মীদের ছোঁয়া ও তত্বাবধায়কের প্রাণপণ তদারকিতে ঝলমল করছে প্রতিটি ওয়ার্ড ও হাসপাতাল আঙ্গিনা। ২৪ ঘন্টা নিরলসভাবে কাজ করছেন ডাক্তার ও নার্সরা। দেয়া হচ্ছে আউটডোর ও ইনডোরে সরকারী পর্যাপ্ত ওষুধ। এক ঝাঁক ডাক্তারের সেবায় রোগীদের ভরসাস্থল হয়ে উঠেছে হাসপাতালটি। বলছিলাম হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কথা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবুল হাদি মোঃ শাহ পরান ২০১৭ সালের ৩০ আগষ্ট বানিয়াচং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। তিনি যোগদানের পূর্বে হাসপাতালটিতে মাত্র ৫ জন ডাক্তার ছিলেন। হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে যখন মানুষের মাঝে বিতৃষ্ণা দেখা দেয় তখন তিনি দায়িত্ব নিয়ে হবিগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ এ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানের সহযোগীতায় ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় ওই হসপিটালটি উন্নীত করেন তিনি।
হাসপাতালের করিডোর বাড়িয়ে ৩ টি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে মহিলা ওয়ার্ড ১ টি, শিশু ওয়ার্ড ১ টি ও পুরুষ ওয়ার্ড রয়েছে একটি। রোগীদের সুচিকিৎসার চিন্তা করে প্রত্যেকটি ওয়ার্ড স্থাপন করা হয়েছে নিরাপদ দূরত্বে।
এমপি মজিদ খানের সহযোগিতায় ডাক্তার আবুল হাদি মোঃ শাহ পরানের প্রচেষ্টায় বর্তমানে মোট ১৫ জন অভিজ্ঞ ডাক্তার নিয়োজিত রয়েছেন। এর মধ্যে মহিলা ডাক্তার দ্বারা একটি গাইনি ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। যার ফলে গর্ভবতী ও প্রসুতি মায়েরা জেলায় গমন না করে বানিয়াচং হাসপাতালে নিরবিচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছেন।
সরজমিনে হাসপাতালে গেলে কথা হয় কয়েকজন ভর্তি হওয়া রোগীর সাথে। এরমধ্যে যাত্রাপাশা গ্রামের প্রসুতি রোগী মারজাহান আক্তার জানান, হাসপাতালের ডাক্তাররা পর্যাপ্ত সেবা দিয়ে তার বাচ্চা প্রসব করিয়েছেন। তিনি বলেন বর্তমানে হাসপাতালে মহিলাদের নিরাপত্তা ও সেবার মানে তিনি খুব খুশি।
কথা হয় আরেক রোগী শেখের মহল্লার নবাব আলীর পুত্র সামছুদ্দিনের সাথে। তিনি সম্প্রতি শায়েস্তাগঞ্জে বাস দূর্ঘটনায় আহত হয়ে প্রথমে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি বানিয়াচংয়ের হাসপাতালে চলে আসেন। তিনি জানান , বানিয়াচংয়ের হাসপতালেরর ডাক্তার-নার্সদের নিবিড় পর্যবেক্ষন-সেবা ও সর্বাপেক্ষা ভাল ব্যবহারে তিনি অনেকটাই সুস্থ্য হয়ে উঠেছেন।
১০ মাসের শিশু রোগী মুনতাহার অভিবাবক আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমবাগ গ্রামের লুভনা আক্তারেরর সাথে। তিনি জানান, শিশুটিকে পাতলা পায়খানার কারনে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করে বাড়ি নিয়ে আসেন। এরপর পূনরায় ওই রোগ দেখা দিলে বানিয়াচং হাসপাতালে ভর্তি করান। ডাক্তারদের সেবায় বর্তমানে শিশুটি পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে উঠেছে বলে জানান লুভনা।
কথা হয় ডাক্তার মনি আক্তারের সাথে। তিনি বলেন করোনার ভয় উপেক্ষা করে তিনিসহ তার সহপাঠিরা ২৪ ঘন্টা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন।
ডাক্তার আবুল হাদি মোঃ শাহ পরান জানান, মাননীয় সাংসদ এডভোকেট আব্দুল মজিদ খানের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় হাসপাতালটি দিন দিন উন্নতি লাভ করছে। এছাড়া তরুণ উদীয়মান ডাক্তারদের হাতের ছোঁয়ায় ও তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম দিয়ে রোগীদের সেবায় তাঁরা সার্বক্ষনিক নিয়োজিত রয়েছেন।
তিনি জানান, ৫০ শয্যা হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়েছে মাত্র কয়েক মাস। সেই অনুযায়ী কয়েকটি ওয়ার্ড বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রসুতি মায়েদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যাপ্ত ডাক্তারও নিয়োগ করা হয়েছে। তারপরও আরও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাধির জন্য সংস্লিষ্ট দপ্তরে চাহিদাপত্র প্রেরন করা হয়েছে। তিনি আশা করছেন অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সরকার চাহিদানুযায়ী চিকিৎসা সামগ্রী যন্ত্রপাতি প্রদান করবেন।
ডাক্তার শাহ পরান আরো বলেন, সেবাই ডাক্তারদের ধর্ম। সেই লক্ষে করোনাকালেও তারা সেবার ব্রত নিয়ে জনগণের সেবায় জীবন বাঁজি রেখে কাজ করছেন এবং আরো যে কোন প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও তারা চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
নিউজ রুমঃ [email protected] অথবা [email protected]
মোবাইল: +8809696195106 অথবা +8801715-395106
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com