শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:০১ পূর্বাহ্ন
এস,এম,শামীম (ফুলপুর) ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ-
ইউনানী আয়ূর্বেদ চিকিৎসা হল সেই প্রাচীনকাল থেকেই রাজকীয় চিকিৎসা ব্যবস্হা। তৎকালীন যুগ থেকে “হেকিম/ কবিরাজ বা বৈদ্য ” উপাধি স্বরূপ- জমিদার, রাজা-বাদশা ও রাজ দরবার সহ সকল মানব কূলের চিকিৎসায় একমাত্র ভরসার অবলম্বন ছিলো আল্লাহর অসীম নেয়ামতে পরিপূর্ণ প্রাকৃতিক লতাপাতা ও খনিজ উপাদানের সমন্বয়ে ব্যবহৃত ইউনানী আয়ূর্বেদ চিকিৎসা শার্স্ত্র।
যুগ যুগ ধরে হাজার বছরের পুরুনো এই ইউনানী আয়ূর্বেদ চিকিৎসা শার্স্ত্র- যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বতর্মান আধুনিক সময় পযর্ন্ত মানব স্বাস্হ্য সেবা ও স্বাস্হ্য সুরক্ষায় জটিল রোগ নির্ণয়, সমাধান, ঔষধ প্রস্তত ও ব্যবহারে ব্যপক অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলছে। তাই বতর্মান সময়ে মানব কল্যাণে ইউনানী ও আয়ুবেদিক চিকিৎসার মান উন্নয়নের স্বার্থে এই সেক্টরের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে ব্যাপক পরিবর্তনের মাধ্যমে সরকারি ভাবে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
চলতি মাসে বাংলাদেশ বোর্ড অব ইউনানী অ্যান্ড আয়ুর্বেদিক সিস্টেমস্ অব মেডিসিন এর অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান (যুগ্মসচিব) মল্লিকা খাতুনের সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক বোর্ডের জেষ্ঠ্য সদস্য, বামা’র প্রেসিডেন্ট, হামদর্দ ল্যাবরেটরীজ (ওয়াক্ফ) বাংলাদেশের চিফ মোতাওয়াল্লী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. হাকীম মো. ইউছুফ হারুন ভূঁইয়া, ডা. মো. মিজানুর রহমান, আ খ মাহবুবুর রহমান সাকী, সালেহ মো. আব্দুর রহমান, মোতালেব মতিন, হাকীম কামরুল ইসলাম নাবাতাতী, হাকীম মোকছেদুল আলম, ড. নুর মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী, অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান, হাকীম মো. কামরুজ্জামান, কবিরাজ শ্যামল প্রসাদ সেনগুপ্তসহ আরও অনেকেই।
উক্ত সভায় ইউনানী আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন কাঠামোর নীতিমালার হালনাগাদ করণ, বেসরকারি ইউনানী আয়ুর্বেদিক কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়ন, বোর্ডের বিদ্যমান অর্ডিন্যান্স যুগোপযোগী করে ইউনানী আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা আইনে রূপান্তর করার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা সহ বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হলেও “চিকিৎসা সনদ” মানসম্মত করার ব্যপারে কোন আলোচনা সভায় উঠে আসে নি।
এমন কি ইউনানী আয়ুবেদিক চিকিৎসায় বংশ পরাক্রমায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের ৫ বছরের অধিক অভিজ্ঞতার ভিতিত্তে (বি- ক্যাটাগরি) সর্ট কোর্সে ভর্তিকৃত ছাত্রছাত্রীদের প্রায় দুই বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও সঠিক ব্যবস্হা গ্রহণের মাধ্যমে সুষ্ঠ সমাধানে কোন প্রকার উদ্যোগ না নেওয়াই বোর্ড কতৃপক্ষ ও বোর্ড সদস্যদের উদাসীনতা বলে মনে করছেন শিক্ষাথীরা।
সরকারি নিবন্ধিত ডিপ্লোমা সম্পন্নকারী চিকিৎসক সদস্যদের একটি অংশের দাবি “বাংলাদেশ বোর্ড অব ইউনানী এন্ড আয়ুবেদিক সিস্টেমস অব মেডিসিন” বোর্ড কতৃক পরিচালিত সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের উদাসীনতায় আজও চিকিৎসা সনদের মান উন্নয়নে কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।
বিশেষ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্হা, কর্মসংস্হান, চাকুরির ক্ষেত্রে ও সচেতন জনসম্মুখে যে বিষয়টি প্রথমে দৃষ্টি গোচর হয় তা হলো- সার্টিফিকেট। নরমাল পেপারে সার্টিফিকেট প্রদান, ইহা সত্যিই বেমানান। ডিজিটাল যুগের সাথে সামনঞ্জস্য বজায় রেখে, মানসম্পন্ন আর্ট পেপারে ইংরেজি টাইপের সার্টিফিকেট প্রদানে উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন ইউনানী আয়ুবেদিক চিকিৎসকগণ।
ইতুপূর্বে সাধারণ পেপারে যে সকল সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছে, আবেদনের প্রেক্ষিতে তা ফেরত নিয়ে নতুন ভাবে নবায়ন করে ডিজিটাল মানসম্পন্ন সার্টিফিকেট প্রদানের লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করতে “বাংলাদেশ বোর্ড অব ইউনানী এন্ড আয়ুবেদিক সিস্টেমস অব মেডিসিন” বোর্ডে নিয়োজিত উর্ধ্বতন সকল কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন “ডিপ্লোমা ইন ইউনানী মেডিসিন এন্ড সার্জারী এবং ডিপ্লোমা ইন আয়ুবেদিক মেডিসিন এন্ড সার্জারীর চিকিৎসকগণ।
এছাড়াও আধুনিক চিকিৎসা সেবা ও মান উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসার পাশাপাশি নবীন চিকিৎসক সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পর আইনের কার্যকারিতা বহাল রেখে বোর্ড অব ইউনানী এন্ড আয়ুবেদিক সিস্টেমস্ অব মেডিসিন প্রতিষ্ঠা করা হয়। যা ১৯৮৩ সালে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে “বাংলাদেশ বোর্ড অব ইউনানী এন্ড আয়ুবেদিক সিস্টেমস্ অব মেডিসিন” নামে বোর্ডের নামকরণ করা হয়। যা বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্হ্য মন্ত্রণালয়ের অধিভূক্ত “স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ” বিভাগের অধীনস্থ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।