রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন
আজ ১২ রবিউল আউয়াল প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্ম তথা আবির্ভাব দিবস। পবিত্র মক্কার মরুপ্রান্তরে ১২ রবিউল আউয়াল মা আমিনার কোল আলো করে জন্ম নিয়েছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
পৌত্তলিকতার অন্ধকারে ডুবে ছিল পুরু আরব। তখন মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সারা সৃষ্টি জগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছিলেন মহান আল্লাহ তায়ালা। সারা বিশ্বের মুসলমানরা আজকের এই দিনটিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বা ঈদে আজম হিসেবে পালন করে থাকেন। বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করেছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) পৃথিবীতে এসেছিলেন তওহিদের বাণী নিয়ে। সদা প্রচার করেছেন শান্তির ধর্ম ইসলাম। তার আবির্ভাব এবং ইসলামের শান্তির বাণী প্রচারে সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। ৪০বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )
বিশ্ববাসীকে তিনি মুক্তি ও শান্তির পথে আসার আহব্বান রাখেন। সব ধরনের কুসংস্কার, গোঁড়ামি, অন্যায়, অবিচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তির বার্তা এনেছিলেন তিনি। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দীর্ঘ ২৩বছর ইসলাম প্রচার করেন। ৬৩বছর বয়সে তিনি মদিনায় ইন্তেকাল করেন।
আজ শুক্রবার দেশের বিভিন্ন মসজিদে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জীবন ও কর্ম নিয়ে ব্যাপক আলোচনা এবং মিলাদ মাহফিল ও জশনে জুলছ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গতকাল বাদ মাগরিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এক বাণীতে বলেন ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর শিক্ষা সমগ্র মানব জাতির জন্য অনুসরণীয়। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উপলক্ষে গতকাল এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উপলক্ষে বিশ্ববাসীসহ মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান। তিনি আরো বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জন্মের স্মৃতি বিজড়িত পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিশ্ববাসী বিশেষত মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত দিন। মহান আল্লাহ তা’আলা হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে ‘রহমাতুল্লিল আলামীন’ তথা সমগ্র বিশ্বজগতের রহমত হিসেবে প্রেরণ করেন।
তিনি বলেন, বিশ্বের ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান ‘মদীনা সনদ’ ছিল মহানবী (সাঃ) এর বিজ্ঞতা ও দূরদর্শিতার প্রকৃষ্ট দলিল। এ দলিলে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণের ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সার্বজনীন ঘোষণা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট বলেন, মহান আল্লাহ আমাদেরকে মহানবী (সাঃ) এর সুমহান আদর্শ যথাযথভাবে অনুসরণের মাধ্যমে দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে কাজ করার তৌফিক দিন।’
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদে মিলাদুন্নবীর (সাঃ) পবিত্র দিনে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহ্ তথা বিশ্ববাসীর শান্তি ও মঙ্গল কামনা করে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন। এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহান আল্লাহ আমাদের প্রিয়নবী (সাঃ) কে এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন, ‘রাহমাতাল্লিল আ’লামিন’ তথা সারা জাহানের জন্য রহমত হিসেবে। পাপাচার, অত্যাচার, মিথ্যা, কুসংস্কার ও সংঘাতে জর্জরিত পৃথিবীতে তিনি মানবতার মুক্তিদাতা ও ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়ে সত্যের আলো জ্বালিয়েছেন। তিনি বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন এবং মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করে বিশ্বে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিয়েছিলেন।
এদিকে, বিভিন্ন নগরীসহ গ্রামেও পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষে মুবারক র্যালি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার মানুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবে র্যালিতে অংশ নেয়। র্যালিতে প্রিয়নবীর শানে রচিত কালজয়ী নানা কবিতার শ্লোক অঙ্কিত রংবেরঙের ফেস্টুন ও প্লেকার্ড হাতে নিয়ে আশিকে রাসূল ছাত্র-জনতা নগরীর গুরুত্বপূণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
কাউছার হামিদ রুকন
যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত মানিকছড়ি উপজেলা শাখা।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।